বাতাসের ধরন পরিবর্তন, বৃষ্টিপাত বাড়বে মে মাসে

বাতাসের ধরন পরিবর্তন, বৃষ্টিপাত বাড়বে মে মাসে
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এই সময় বৃষ্টিটা যে সিস্টেমে হয়, সেটাকে আমরা বলি পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব। মানে শক্তিশালী পশ্চিমা লঘুচাপ থাকতে হবে। নরমালি ডিসেম্বর থেকে এই এপ্রিল পর্যন্ত গড়ে ৫টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পশ্চিমা লঘুচাপ শক্তিশালী অবস্থানে (স্ট্রংলি ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স) থাকে। এই ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স আসে ভূমধ্যসাগর থেকে। তারপর সেটা ধীরে ধীরে দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। তার সঙ্গে যদি আমাদের দক্ষিণী বাতাসের সংমিশ্রণ ঘটে অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর থেকে ময়েশ্চার ক্যারি করে, সেক্ষেত্রে বৃষ্টি হয়। এই সিস্টেমটা এলে কয়েকদিন পরপর দুই থেকে চার দিন বৃষ্টি হয়।

এবছর ওই ধরনের ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স এখনো হয়নি। যেগুলো হয়েছে তা স্থানীয়ভাবে হয়েছে। এ কারণে হঠাৎ কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে, যেমন কাল হঠাৎ করে দেশের বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটা লোকাল মেকানিজম। এটা সে রকম কোনো সিস্টেমের বৃষ্টি নয়।ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে এরকম হয়। পাঁচ-দশ বছর পরপর এটা হয়। প্রতি বছর তো একই রকম থাকবে না।

এবারের এরকম হওয়ার কারণ হচ্ছে বাতাসের ধরন পরিবর্তন হয়ে গেছে। দু’দিক থেকে বাতাসটা আসছে না। বে অব বেঙ্গলে এসময় প্রতিবছর সাইক্লোন ফরম করে। মার্চ-এপ্রিলে সাইক্লোন আমাদের দেশে না হলেও ভারতে চলে যায়। প্রতি বছরই হয়। এবছর এখনো হয়নি। তার মানে আমাদের এদিকে সাগরে যে তাপমাত্রা, তা কম আছে। কম থাকার কারণে বাতাসটা দক্ষিণ দিক থেকে প্রবাহিত হয়নি। এজন্য এখনো শরীর টানে।এখন যে বাতাস আছে, তা কেবল পশ্চিমা বাতাস। এই পুরো ম্যাকানিজম বৃষ্টির জন্য ফেবারেবল নয়। তবে একটু একটু ওয়াস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স দেখা যাচ্ছে। হয়তো ১ মে রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে দুই থেকে তিনদিন কন্টিনিউ করতে পারে। মে মাসে বৃষ্টিপাত বেশি হতে পারে। ১ থেকে ৩ মে অনেক বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।বজলুর রশিদ বলেন, এখনো তাপপ্রবাহ হচ্ছে, সেটা বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে। এটা থাকবে না ক’দিন মধ্যে।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।এই অবস্থায় শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা নাগাদ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।এদিকে সীতাকুণ্ড, রাঙামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, রাজশাহী ও পাবনা অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, সেটা কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হবে। বৃহস্পতিবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে, ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এই অবস্থাকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বলা হয়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েঠে তাড়াশে, ৫৪ মিলিমিটার। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ২ মিলিমিটার।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন