৪ দিন পর খুলেছে শপিং মল, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে কেনাকাটা 

৪ দিন পর খুলেছে শপিং মল, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে কেনাকাটা 
 নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাস মহামারির লকডাউনের মধ্যে সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও শপিংমল খুলেছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার (০৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় খুলে দেওয়া হয় শপিং মল।খোলা থাকবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।প্রাথমিকভাবে ১৩ এপ্রিল শপিংমল ও দোকানপাট খোলা যাবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।শুক্রবার সকালে রাজধানীর সবচেয়ে বড় বিপণীবিতান বসুন্ধরা সিটিতে গিয়ে দেখা যায়, দারুণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে কেনাকাটা।  বসুন্ধরা সিটি প্রাঙ্গণে পা রাখতেই কানে ভেসে আসে স্বাস্থ্যবিধি পালনের সার্বিক নির্দেশনা। সিটি এলাকায় বাধ্যতামূলকভাবে পরতে হয়েছে মাস্ক। সেই সঙ্গে আগতদের সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য বারবার করা হচ্ছে মাইকিং। লিফটে ছয়জনের বেশি উঠতেও নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে আগতদের।বসুন্ধরা সিটির প্রবেশের মুখেই রয়েছে লিকুইড সোপ দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। সেখান থেকে হাত ধুয়ে জীবাণুনাশক ট্যানেল পেরিয়ে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের শরীরের তাপমাত্র মাপছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এ পরীক্ষায় পাস করতে পারলেই আবার হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে প্রবেশ করানো হচ্ছে আগত সবাইকে।এ বিষয়ে বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (অ্যাডমিন) হাবিবুর রহমান চৌধুরী  বলেন, শপিংমলগুলোর কাছে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে বসুন্ধরা সিটি রোল মডেল। অন্যান্য শপিংমলে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার বিষয়টি অনুকরণ করতে পারে।তিনি বলেন, বসুন্ধরা সিটিতে মাস্ক ছাড়া ঘোরা অসম্ভব। সেই সঙ্গে প্রবেশের আগেই হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে শরীরের তাপমাত্রা মাপারও ব্যবস্থা। কারো শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা থাকলে আমরা তাকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছি না। সেই সঙ্গে তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার অনুরোধ করছে।তিনি জানান, সরকারি নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে বারবার মাইকিং করার পাশাপাশি সার্বক্ষণিক একাধিক দল টহল দিচ্ছে। যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানেন, তাদের জন্য প্রতীকী শাস্তির ব্যবস্থাও রেখেছি আমরা। যেমন- সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্ত করা- এগুলো আমরা করছি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য।  বসুন্ধরা সিটি কর্তৃপক্ষের এসব ব্যবস্থায় দারুণ সন্তুষ্ট সেখানকার ব্যবসায়ীরা। টু ডে ফ্যাশনের ম্যানেজার মহিবুল ইসলাম বলেন, মার্কেট কর্তৃপক্ষ চমৎকার সব ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরাও নিজস্ব কিছু ব্যবস্থাপনা রেখেছি। যেমন- আমরা দূরত্ব বজায় রেখে বসেছি। সেই সঙ্গে মাস্ক ছাড়া কোনো ক্রেতাকে ঢুকতে দিচ্ছি না। এর পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা তো রয়েছেই।বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, বিক্রি বিকেলের দিকে জমে উঠবে। তবে সকাল থেকেও বিক্রি হচ্ছে।ফ্যাশন হাউজ ঢংয়ের বিক্রয় ব্যবস্থাপক শহীদুল ইসলাম লিটন বলেন, মার্কেট কর্তৃপক্ষ প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। আমরাও কিছু ব্যবস্থা রেখেছি।স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিং মল খুলে দেওয়ায় স্বস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারাও। ধানমন্ডির জিগাতলা থেকে বসুন্ধরা সিটিতে কেনাকাটা করতে আসা মার্জিয়া মাহবুব বলেন, সামনে পহেলা বৈশাখ, এ সময় মার্কেট বন্ধ রাখলে কেনাকাটা করা কঠিন। কারণ অনলাইনে পণ্যটি দেখে, ট্রায়াল দিয়ে কেনা যায় না। সরকারকে ধন্যবাদ মার্কেট খুলে দেওয়ায়। আর বসুন্ধরা সিটিতে স্বাস্থ্যবিধি দারুণভাবে মানা হচ্ছে।আরেক ক্রেতা আয়াতুল্লাহ আনসারি বলেন, মার্কেটটা আসলে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা উচিত। কারণ, আজ ছুটির দিন বলে সকালে আসতে পারলাম, অন্যদিন তো পারবো না। আশা করি, সরকার বিষয়টি দেখবে।গত রোববার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধকল্পে ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ সময়ে জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে অফিস, গণপরিবহনসহ সব ধরনের যান চলাচল, দোকানপাট-শপিংমল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। তবে নিত্যপণ্যের দোকান ও জরুরি সেবার যানবাহন চলাচলের সিদ্ধান্ত রাখা হয়।কিন্তু অফিস খোলা রেখে গণপরিবহন বন্ধে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির পর ৭ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন চালু করা হয়। এবার দোকানপাট ও শপিংমলও চালু করা হলো।এরপর বৃহস্পতিবার (০৮ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ শুক্রবার (৯ এপ্রিল) থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন