নিজস্ব প্রতিবেদক : বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে।সোমবার (২২ মার্চ) এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল।তবে খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় এদিন আদালতে হাজির হননি। এদিন তার পক্ষে সময় আবেদন করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার।সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নজরুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ২০ মে নতুন দিন ধার্য করেন।পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘আমরা আদালতে বলেছি খালেদা জিয়া খুব অসুস্থ। করোনা পরিস্থিতিতে অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে সরকার তাকে মুক্তি দিয়েছে। এ অবস্থায় তার পক্ষে আদালতে আসা সম্ভব নয়। তাই শুনানির জন্য সময়ের আবেদন জানাচ্ছি। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ পিছিয়ে দেন। ’বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি করা হয়। ওই বছরের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।এরপর ২০০৮ সাল থেকে দীর্ঘ ৯ বছর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটির বিচারকাজ স্থগিত ছিল। সবশেষ ২০১৭ সালের ২৮ মে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। এরপর থেকে মামলাটি অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য রয়েছে।চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এমকে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন মারা গেছেন। আর যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।তাদের বাদ দিয়ে এখন বাকি আসামিদের বিচার চলছে। খালেদা জিয়া ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন— জোট সরকারের সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী ও সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। কারা হেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সরকারের নির্বাহী আদেশে গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর মুক্তির মেয়াদ আরেক দফায় ছয় মাস বাড়ানো হয়। সেই থেকে তিনি গুলশানের বাসায় আছেন।