কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থানায় ফেরারি এক আসামিকে নিয়ে অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার মো. সোলাইমান নামে ফেরারি এই আসামির হাতে হাতকড়ার বদলে ফুল তুলে? দিয়েছেন ওসি মো. জাকির রব্বানী। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর বিকালে থানায় আত্মসমর্পণ করতে এলে অভূতপূর্ব এই ঘটনাটি ঘটে। মিঠামইন থানার ওসি মো. জাকির রব্বানী জানান, মো. সোলাইমান মিঠামইন উপজেলার শরীফপুর গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে। নারায়ণগঞ্জের আদালতে তার বিরুদ্ধে একটি সিআর মামলা রয়েছে। এই মামলায় দুই বছরের মতো সময় ধরে তিনি পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি মো. সোলাইমানকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ একাধিকবার তার বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। এ অবস্থায় গত শনিবার বিকালে হঠাৎ করে মিঠামইন থানার ডিউটি অফিসারের কাছে হাজির হন। তিনি ডিউটি অফিসারকে জানান, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি ধরা দিতে এসেছেন। ওসি মো. জাকির রব্বানীর নিকট বিষয়টি কিছুটা অবিশ্বাস ঠেকে। তিনি সত্যিকার অর্থেই মো. সোলাইমান ওয়ারেন্টভুক্ত কিনা রেজিস্ট্রার খতিয়ে নিশ্চিত হোন সত্যিই মো. সোলাইমান ওয়ারেন্টভুক্ত একজন আসামি।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজে নিজে ধরা দিতে থানায় চলে আসায় মো. সোলাইমানকে সাধুবাদ জানালেন ওসি মো. জাকির রব্বানী। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন, একজন অভিযুক্ত বা অপরাধী হিসাবে তিনি লোকটা তিরস্কার করবেন না আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি হিসেবে তাকে পুরস্কৃত করবেন। যেন তাকে অনুসরণ করে অন্যান্য পলাতক আসামিরা এভাবে থানায় এসে হাজির হন। এ সিদ্ধান্ত থেকে ওসি মো. জাকির রব্বানী তার হাতে গোলাপ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া মো. সোলাইমানকে।
মো. সোলাইমান তখন জানান, গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি পলাতক রয়েছেন। থানা পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে গ্রেফতার করার জন্য, প্রায়শই পুলিশ বাড়িতে হানা দিচ্ছে। পলাতক জীবন মানেই অশান্তিময়। ফলে তার মনে শুভবুদ্ধির উদয় হয়। পুলিশকে আর কষ্ট দিবে না। সিদ্ধান্ত নিলেন, পুলিশের হাতে ধরা দিবেন। তাই করলেন। নিজেই সশরীরে হাজির হলেন মিঠামইন থানায়। ওসি মো. জাকির রব্বানী বলেন, আমরা আহ্বান জানচ্ছি যারা পলাতক জীবন যাপনে রয়েছেন, আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে থানা অথবা বিজ্ঞ আদালতে অতিসত্বর হাজির হন। আপনার বিরুদ্ধে যে মামলা থাকুক না কেন, তা আইনি মোকাবেলা করে নিষ্পত্তি করুন। বিচারিক কাজে সহযোগিতা করুন।