নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাবেক নেত্রী ও অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানের মামলার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) এ মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল।কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবুবকর ছিদ্দিক আগামী ২৬ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন।গত বছরের ২৪ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ থেকে শারমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আদালত থেকে জামিন পেয়ে তিনি মুক্তি লাভ করেন।সাবেক এ ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে ২৩ জুলাই রাতে বিএসএমএমইউয়ের প্রক্টর বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় প্রতারণার মামলা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এ মাস্কের কারণে করোনা সম্মুখযোদ্ধাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে।মামলায় বিএসএমএইউয়ের প্রক্টর মো. মোজাফফর আহমেদ বলেছেন, গত ২৭ জুন শারমিন জাহানকে ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। কার্যাদেশের বিপরীতে ৩০ জুন প্রথম দফায় ১ হাজার ৩০০টি, ২ জুলাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ৪৬০টি ও ১ হাজারটি এবং ১৩ জুলাই চতুর্থ দফায় ৭০০টি মাস্ক সরবরাহ করে। প্রথম ও দ্বিতীয় লটের মাস্কে কোনো সমস্যা ছিল না।তবে তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় লট বিতরণ ও ব্যবহারে ত্রুটি পাওয়া যায় এবং মাস্কের গুণগত মান স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পাওয়া যায়নি। কোনো মাস্কের বন্ধনী ফিতা ছিঁড়ে গেছে, কোনো মাস্কের ছাপানো লেখায় ত্রুটিপূর্ণ ইংরেজি লেখা পাওয়া গেছে, কোনো কোনো মাস্কের নিরাপত্তা কোড ও লট নম্বর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে নকল বলে জানা গেছে। এ কারণে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে যে মাস্কের গুণগত মান নিম্নমানের ছিল।মামলায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শারমিন জাহানকে গত ১৮ জুলাই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল। শারমিন গত ২০ জুলাই দেওয়া জবাবে দুঃখ প্রকাশ করেন, যা দোষ স্বীকারের শামিল। শারমিন জাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক পদে ছিলেন। আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন। এর আগের কমিটিতে একই উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন তিনি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত তিনি। তার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলার শ্যামগঞ্জের গোহালকান্দায়। তিনি মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী।