চলচ্চিত্র অনুদাননির্ভর হয়ে চলতে পারে না : তথ্যমন্ত্রী

চলচ্চিত্র অনুদাননির্ভর হয়ে চলতে পারে না : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ; চলচ্চিত্র অনুদাননির্ভর হয়ে চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, আমরা কিছু অনুদান দিই ভালো কিছু ছবি নির্মাণের জন্য। আগে অনুদানের টাকা দিয়ে ‘আর্টফিল্ম’ হত এখন বাণিজ্যিক ছবি হচ্ছে। এর সঙ্গে কিছু শর্তও দেয়া হয়েছে। যেমন- যারা অনুদান দিয়ে সিনেমা বানাবে তাদের কমপক্ষে ১০টি হলে মুক্তি দিতে হবে। সেখানেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সিনেমা হল নির্মাণ-সংস্কারে ব্যাংক ঋণ চালুর প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রীকে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন। সিনেমা হল বন্ধের পেছনে অর্থই কি মূল কারণ না অন্যকোনো কারণ রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমতো সিনেমা হল বন্ধের বহুবিদ কারণ রয়েছে। সিনেমা হল শুধু বাংলাদেশে বন্ধ হয়েছে তা কিন্তু নয়। সিনেমার তীর্থস্থান বোম্বে সিটিতেও অনেক বন্ধ হয়ে গেছে ৫ সাত বছরে। কলকাতা শহরেও অনেকগুলো বন্ধ হয়ে গেছে আবার নতুন সিনেপ্লেক্স হবে। সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার পেছনে সিনেমার মান, মানুষের রুচির পরিবর্তন, অনলাইনে দেখতে পায় সেটাও একটা কারণ। ক্ষতিগ্রস্তরা প্রণোদনা পাচ্ছে না এ খাতে সে রকম কিছু হবে কিনা জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, অন্যান্য প্রণোদনার সঙ্গে এটাকে মেলানো ঠিক হবে না। কারণ এখানে ভোক্তা লিমিটেড। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক এটাকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কারা পাবে। সুতরাং এ ঋণ নিয়ে অন্য ব্যবসা করবে সেটা সম্ভব না। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র প্রদর্শন শিল্পের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। এ তহবিল হলো একটি প্রণোদনা প্যাকেজ বা লোন। এটি তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে এ লোন বিতরণ করা হবে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বল্প সুদে ও সার্ভিস চার্জে অর্থ সিডিউল ব্যাংকে দেবে। তখন সিডিউল ব্যাংক এর সঙ্গে তাদের পরিচালনা ব্যয় যুক্ত করে জেলা শহরে ও উপজেলায় সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে ভোক্তাদের কাছে এই ঋণ বিতরণ করবে। আর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরে ৫ শতাংশ সুদে এই ঋণ বিতরণ করা হবে। ৮ বছরের মেয়াদে এক বছরের গ্রেজ প্রিয়ডে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চাহিদার ভিত্তিতে প্রয়োজনে দেড় হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখান থেকে ঋণ শুধু তারাই পাবে যারা সিনেমা হল সংস্কার করতে চায়, বন্ধ সিনেমা হল পুনরায় চালু করতে চায়। অথবা নতুন সিনেমা হল বানাতে চায়। একই সঙ্গে কোনো মার্কেটের ভেতরে যদি কোনো সিনেপ্লেক্স করতে চায় সেক্ষেত্রেও এ ঋণ দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম একজন ভোক্তাকে একটি হলের জন্য ৫ কোটি টাকার বেশি না দেয়ার জন্য। এ ধরনের প্যাকেজ যখন ঘোষণা করে তখন বড় বড় ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী অনেকেই বেশি ঋণ নিয়ে নেয়। তখন অনেকেই ঋণ পায় না। সেজন্য একটি হলের জন্য ৫ কোটি কেউ যদি দুইটি হল করলে সেখানে যে দুইটি হলের জন্য পাবে। কিন্তু ব্যাংক লোন তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমেই দেয়া হবে। সকল নিয়ম-কানুন ও শর্ত পূরণ করেই নিতে হবে। আর ব্যাংকও এগুলো যাচাই-বাছাই না করে দেবে না। এখনে পার্থক্য শুধু এই যে সুদের হার কম। প্রচলিত ৯ শতাংশের স্থানে সাড়ে চার শতাংশ। এই ঋণের এটা হচ্ছে সুবিধা আর একটু দীর্ঘমেয়াদি। সুতরাং একানে খুব বেশি নয় ছয় করার সুযোগ নেই। হাছান মাহমুদ বলেন, কেউ টিনের ঘর তুলে ঋণ নেবে সেটা হবে না। আমরা সে বিষয়ে অবশ্যই শতর্ক দৃষ্টি রাখব। এই ঋণ শিগগিরই কার্যকর হবে। ইতোমধ্যে সমস্ত তফসিলি ব্যাংকে চিঠি চলে গেছে। যেসব ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুবিধা নিয়ে ভোক্তাদের কাছে এ ঋণ দিতে পারবে। তারা জানানোর পরপরই সে সমস্ত ব্যাংকে আবেদন করে এ ঋণ নেয়া যাবে। পরবর্তিতে আপনাদের জানানো হবে কোন কোন ব্যাংক থেকে এ ঋণ দেয়া হবে। তিনি বলেন, আশা করি এটি হলে অনেক বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হল চালু হবে। বেশিভাগ সিনেসা হলের আধুনিকায়ন প্রয়োজন কারণ মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়ে গেছে। তার সঙ্গে খাপ-খাইয়ে সিনেমা হল সাজাতে হবে। তা না হলে মানুষ যাবে না। সুতরাং আধুনিকায়নের জন্য এ ঋণ সুবিধা কাজে লাগবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন