ঢাকা: ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে কারাগারে মারা যাওয়া লেখক মুশতাক আহমেদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ছাত্র অধিকার পরিষদ এ গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে।জানাজায় ইমামতি করেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। জানাজার আগে আগামী ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।জানাজাপূর্ব সমাবেশে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বিতর্কিত আইনে লেখক মুশতাক আহমেদকে কারাগারে রাখা হয়। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় তার স্ত্রী মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। আমি ছাত্রবন্ধুদের পোস্টার দেখলাম মুশতাকের খুনি রাষ্ট্র। আমি বলি রাষ্ট্র নয়, কারণ রাষ্ট্র আমাদের সবার। মুশতাকের খুনি বিনা ভোটের সরকার, অবৈধ সরকার। ছয়বার মুশতাক আহমেদের জামিন নাকচ করা হয়েছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যদি পেট্রোল বোমা মারার হুকুমের আসামি হতে পারে তাহলে বর্তমান সরকারকেও মুশতাক হত্যায় হুকুমের আসামি করতে হবে। নোয়াখালীর সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যার জন্য ওবায়দুল কাদেরকে আসামি করতে হবে। মুশতাকের খুনের দায় সরকারকে নিতে হবে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, আজকে যে আইনে কিশোর, মুশতাক গ্রেপ্তার হয়েছে, সেই আইন দায়ী নাকি আইনটি যারা তৈরি করেছে তারা দায়ী, যারা প্রয়োগ করেছে তারা দায়ী? এই আইন যে সরকার করেছে তারাই দায়ী। এই আইনে মুশতাকের মতো মানুষকে ছয়বার জামিন দেয়নি। এটা কেমন রাষ্ট্র যেখানে প্রখ্যাত খুনিকে ক্ষমা দেওয়া হয়, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা দেওয়া হয়। অন্যদিকে মুশতাকের মতো সাধারণ প্রতিবাদী কণ্ঠকে কারাগারে থাকতে হয়।গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ বলেন, আজকে কোনো পত্রিকায় কার্টুন নাই, আগে আইয়ুব থেকে শুরু করে সবার কার্টুন হয়েছে। এখন কেন কার্টুন করা হবে না? সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা মৌলিক অধিকার। এটি অপরাধ নয়। আপনারা চুরি করবেন, হাসপাতালের ব্যবস্থা করবেন না—আমরা তার প্রতিবাদ জানাবো না, তা হবে না। আমরা আমাদের মুখের জবান কাউকে কেড়ে নিতে দেব না।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির বিভাগের অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী বলেন, দম বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি আমাদের ভাঙতে হবে। এটা আর কেউ এসে ভেঙে দেবে না।