চট্টগ্রাম: ‘করোনাকালে কর্মী ছাটাই, বেতন-বোনাস, পদোন্নতি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা স্থগিত করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো বিশ্বব্যাপী, তার ঠিক বিপরীত পথে হেঁটেছি আমরা’, প্রায় দুইশ কর্মীর করতালির মাঝে কথাগুলো বললেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) স্বপ্নদ্রষ্টা সাঈদ আল নোমান।অতিমারীর শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত দায়িত্বের বাইরে এসে নেতৃত্বমূলক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখায় বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৫ ক্যাটাগরিতে ৩৩ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে সম্মাননা জানালো ইডিইউ কর্তৃপক্ষ।ক্রেস্টের পাশাপাশি সম্মাননা বাবদ ১২ লাখ টাকার আর্থিক প্রণোদনাও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।ইডিইউ ক্যাম্পাসের নবনির্মিত কলোসিয়ামে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ। তিনি বলেন, উন্নত রুচির ছোঁয়ায় শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে ইস্ট ডেল্টায়। বাণিজ্যিক চিন্তার বাইরে এসে আন্তর্জাতিক মান অনুসারে তৈরিকৃত কেবল ৩০ জন শিক্ষার্থীর উপযোগী ক্লাসরুমগুলো বর্তমানে ‘অ্যাকটিভ লার্নিং’ ক্লাসরুমে পরিণত করার যে প্রকল্প ইডিইউ নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়।তিনি আরো বলেন, অল্প সময়ে ইডিইউর সার্বিক সফলতা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবনী নেতৃত্ব এবং কর্মরত সকলের দলগত পরিশ্রম ও নিবেদনের ফসল। যে প্রতিষ্ঠান কর্মীদের কাজের স্বীকৃতি দেয়, তার সাফল্য অবশ্যম্ভাবী। শিক্ষার গুণগতমান বজায় রেখে ইডিইউ দেশ-বিদেশে পরিচিত হয়ে উঠবে এমনটাই আশা করেন এ আইনবিদ।কোভিড-১৯ এর সঙ্কট মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন ও পরিচালনার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত সাঈদ আল নোমান, যিনি একইসঙ্গে ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, করোনার শুরু থেকে ইডিইউ যে ইতিবাচক ও যুগান্তকারী রূপান্তর ঘটিয়েছে, তা প্রতিটি বিভাগের কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীলতা ব্যতীত দুরূহ হতো। ‘তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আর্থিক সংকটের মাঝেও শুরু থেকেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবার পূর্ণাঙ্গ বেতন-বোনাস ও পদোন্নতি সচল রেখেছে। প্রত্যেকেই স্ব স্ব অবস্থান থেকে উল্লেখযোগ্য কাজ করে গেলেও এর মাঝে কেউ কেউ রেখেছেন অসামান্য ভূমিকা। তাদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেছি আমরা’।সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য মু. সিকান্দার খান বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভিভাবক সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অতিমারীতে অনলাইন ক্লাসের অনুমতি প্রদান করে যুগোপযোগী ভূমিকা রেখেছে। এতে বাংলাদেশের শিক্ষা কার্যক্রম স্থবিরতা ও পিছিয়ে পড়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। করোনায় উচ্চশিক্ষাঙ্গনে যে ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, তা ধরে রাখতে ইউজিসি সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপাচার্য।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহাদত হোসেন। অতিথি ছিলেন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ, উপ পরিচালক রাবেয়া খন্দকার ও সহকারী পরিচালক শাহনাজ সুলতানা। স্বাগত বক্তব্য দেন ইডিইউর রেজিস্ট্রার সজল কান্তি বড়ুয়া।শিক্ষকদের মধ্যে ‘আবদুল্লাহ আল নোমান এমপ্লয়ী অব দ্য ইয়ার’ সম্মাননায় ভূষিত হন স্কুল অব বিজনেসের অ্যাসোসিয়েট ডিন ড. রকিবুল কবির ও প্রশাসনের মধ্যে আইটি অ্যান্ড ইনোভেশনস এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোফাজ্জল উদ্দিন। এছাড়া ফ্যাকাল্টি লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, স্টাফ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, ফ্যাকাল্টি পারফর্মেন্স অ্যাওয়ার্ড, স্টাফ পারফর্মেন্স অ্যাওয়ার্ড- এই চারটি ক্যাটাগরিতে আরও ৩১ জন পুরস্কার পেয়েছেন।