চট্টগ্রাম: সন্ত্রাস, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি আমরা এ শহরে চাই না। আমরা শান্তিতে বসবাস করতে চাই।আমরা চাই যিনি নগরপিতা হিসেবে দায়িত্ব নেবেন তার কাছে অপরাজনৈতিক শক্তি ও যারা সন্ত্রাস করে, তাদের স্থান হবে না। সন্ত্রাসমুক্ত খুন-খারাবিমুক্ত চট্টগ্রাম চাই। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এসব কথা বলেন।নওফেল বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মেয়র হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র ছিলেন। রেজাউল করিম চৌধুরী সবার মতামতের ভিত্তিতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সবাইকে সাথে নিয়ে, সমন্বয়ের মাধ্যমে কোনো ধরনের আমাদের প্রতিযোগিতার প্রয়োজন নেই, বিবাদের প্রয়োজন নেই, বিরোধের প্রয়োজন নেই, সব সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এ শহরের সব নাগরিক, সব জনপ্রতিনিধি সবাইকে সাথে নিয়ে আমরা নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে পারি। মানুষের চাহিদা সীমিত। যদি সবাই সহযোগিতা করেন তাহলে শতভাগ প্রত্যাশা পূরণ হবে। সংবর্ধনা নয় মতামত গ্রহণের জন্য সমাবেশের আয়োজন করেছেন নতুন মেয়র। সমন্বয় সুন্দরভাবে হলে নাগরিকরা সুবিধা পাবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক উন্নয়নকাজ উপহার দিয়েছেন। নগরপিতার মাধ্যমে এসব উন্নয়নের খবর মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারবো। সমাবেশে চসিকের বিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমি ৬ মাস সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। যতদিন আইন করে সিটি করপোরেশনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা না হবে ততদিন প্রত্যাশা থাকবে বেশি, কাজ হবে কম। মহাসমস্যা চসিকের আয়। যে প্রতিষ্ঠান লাভবান হচ্ছে তাদের কাছ থেকে সারচার্জ আদায় করতে হবে। নগরবাসী ২০ শতাংশ ব্যবহার করে, বাকি অংশ ব্যবহার করে বন্দর, কাস্টম, ইপিজেড, বড় বড় কারখানা। তারা করিমুদ্দিন আলিমুদ্দিনের মতো ট্যাক্স দিলে হবে?চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রেজাউল করিম পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিজের হাতে নিয়েছেন। কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরসহ অনেক কিছু করছেন। রেজাউল করিম কথা রাখার চেষ্টা করেছেন সুধী সমাবেশ করে। চট্টগ্রামে সমস্যার শেষ নেই। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে হবে। এ নগরকে সুন্দর, সচল ও ব্যবসাবান্ধব করতে হবে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার জন্য বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি নিয়ে পরিষদ গঠন করতে পারেন। তাকে কিশোর গ্যাং ও মাদক নির্মূল করতে হবে। সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে দেশের উন্নয়ন।মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ, চবির সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ারুল আজিম আরিফ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চুয়েট উপাচার্য ড. রফিকুল আলম, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ হারুন, নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন, রেড ক্রিসেন্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. শেখ শফিউল আজম, আইইবির সভাপতি প্রবীর কুমার সেন, চবির সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, নগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, কাউন্সিলর সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টু।স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক।