ঢাকা: ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার ঘরে ঘরে পাঠাগার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় পাঠাগার আন্দোলন (জাপাআ) দেশের বিভিন্ন স্থানে চালু করেছে ৪০টি নতুন পাঠাগার।
শুক্রবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এসব পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়।গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পাঠাগারগুলো উদ্বোধন করেন এবং পাঠাগার প্রতিনিধিদের হাতে জাপাআ-এর সদস্য সনদ ও ৪০টি করে বই তুলে দেন।আরিফ চৌধুরী শুভ-এর সঞ্চালনায় এবং জাপাআ-এর উপদেষ্টা প্রফেসর এমিরেটাস ড. এম ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) সৈয়দ নুরুল বাসির, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এম এন জামান, অবসরপ্রাপ্ত সচিব কাশেম মাসুদ, অবসরপ্রাপ্ত সচিব জিয়াউল হক, পরিবেশবিদ প্রফেসর কামারুজ্জামান মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুলহক নুর প্রমুখ।জাতীয় পাঠাগার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আরিফ চৌধুরী শুভ বলেন, পাঠাগার হলো জনগণের বিশ্ববিদ্যালয়। ‘বই পড়ি পাঠাগার গড়ি’ স্লোগানে আমরা সেই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কাজটি করছি ২০১৭ সাল থেকে। আমাদের কাজই আমাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ আজকের এই জায়গায় নিয়ে এসেছে।তিনি আরও বলেন, প্রতিটি সচেতন পরিবারেরই উচিত একটি পারিবারিক পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা। মুক্ত জ্ঞান চর্চার উন্মুক্ত মাধ্যম হলো পাঠাগার অথচ সমাজে সবই আছে, কিন্তু একটি পাঠাগারই নেই। পাঠাগারের এই অভাব বোধ যেন কারো মাঝে কাজ করছে না। আমরা প্রতিটি গ্রামে অন্তত একটি করে পাঠাগার গড়ার মাধ্যমে বই পড়া আন্দোলনকে প্রতিটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিতে চাই। এরই মধ্যে ৬৪ জেলাতে আমরা পাঠাগার গড়েছি। আজও সারাদেশে ৪০টি নতুন পাঠাগার উদ্বোধন করেছি। এভাবে একদিন গ্রামে গ্রামে পাঠাগার গড়ে তুলতে পারবো। প্রধান অতিথি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে জাতীয় পাঠাগার আন্দোলনের যে লড়াই, সে লড়াই টিকিয়ে রাখতে হলে সরকার ও আমাদের জোরালো সমর্থন থাকা দরকার। সরকার এরই মধ্যে তাদের সমর্থন দিয়েছেন, আমরাও তাদের সাথে আছি। তাদের আর্থিক সহায়তার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি।তিনি আরও বলেন, যে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাগার নেই, তাদের এমপিও বাতিল করা হোক। আর পাঠাগার ছাড়া কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন নতুন করে এমপিও না করা হয় সেজন্য সরকারকে অনুরোধ করছি।বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এম এন জামান বলেন, পাঠাগার আন্দোলন এই সময়ের জন্য রেনেসাঁ। মেঠোপথ থেকে সমাজের জন্য আজকে যেসকল তরুণরা ছুটে এসেছেন রাজধানীতে, তারাই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণ করবেন আগামীতে।পরিবেশবিদ প্রফেসর কামারুজ্জাম মজুমদার বলেন, যে বই মানুষকে পথ দেখায়, অথচ সেই বই থেকে আমরা আজ অনেকটা দূরে। পাঠাগার আন্দোলন বই ও পাঠকের মধ্যে এই দূরত্ব অনেকটা গোছাবে বলে মনে করছি।