আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

নিজস্ব প্রতিবেদক ;  ফেব্রুয়ারির প্রতিটি দিন এক একটি চেতনায় শাণিত। মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ঘটনা ঘটলেও পুরো মাসই বাঙালী গণমানুষের চেতনাকে নতুনভাবে জাগিয়ে তোলে। সে সময় ভাষা আন্দোলনের চেতনায় সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ। সবাই চায় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা হোক। এমন সময় ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি ঢাকায় ছিল মুসলিম লীগের কাউন্সিল। কাউন্সিল উপলক্ষে ঢাকায় আসেন তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন। পূর্ব কর্মসূচী অনুযায়ী ২৭ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে নিজেদের গুণকীর্তন তুলে ধরেন পূর্ব পাকিস্তানের গণমানুষের সামনে। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী নুর”ল আমিন। ওই সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নানা ধরনের বক্তব্য শেষে কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দোহাই দিয়ে বলেন, পাকিস্তানকে আমরা ইসলামী রাষ্ট্ররূপে গঠন করতে যাচ্ছি। এ সময় তিনি বলেন, প্রদেশের ভাষা কি হবে তা প্রদেশবাসীই ঠিক করবেন, কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। এর পক্ষে তিনি যুক্তি দেখান একাধিক রাষ্ট্রভাষা থাকলে কোন রাষ্ট্র শক্তিশালী হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাভাষাকে আরবী হরফে লেখার চেষ্টা সফল হয়েছে। এসব কেন্দ্র জনগণ নিজ উদ্যোগে খুলেছে বলে তিনি জানান। খাজা নাজিমুদ্দিনের এ বক্তব্যটুকুই দাবানলের মতো বাঙালী জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২৭ জানুয়ারি নাজিমুদ্দিন এ বক্তব্য না দিলে হয়ত আরও কিছু সময় নিয়ে বাঙালীরা ভাষার অধিকার আদায় করত। তার এ বক্তব্যের পর বাঙালী বুদ্ধিজীবী থেকে আপামর জনতা সবাইকে জাগিয়ে তোলে। সকলের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজপথে। এভাবে পাকিস্তানীদের বক্তৃতা-বিবৃতির মধ্য দিয়ে বাঙালীদের কাছে স্পষ্ট হয়, আন্দোলন করে অধিকার আদায় করতে হবে। ভাষা আন্দোলনের মাসের চতুর্থ দিন আজ। বরাবরের মতো আজও জাতির সূর্যসন্তানদের অবদান বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবেন বিশিষ্টজনরা।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন