নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গত বছর যে সুযোগ ছিল, এবারও স্বাভাবিকভাবে ততটুকুই থাকছে। সবাইকেই এই পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে, বিভিন্নভাবে এ পরীক্ষা হবে। কাজেই সেখানে তাদের মেধার পরিচয় দিয়ে দিয়েই ভর্তির সুযোগ পাবে তারা। গতকাল শনিবার এইচএসসি ও সমমানে অটোপাসের ফল ঘোষণা শেষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমানের ফল ঘোষণা করেন। শিক্ষামন্ত্রীসহ এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানসহ বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর আগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ফলাফল গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী। করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাস দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরীক্ষা ছাড়া জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফল গড় করে এইচএসসির ফল গতকাল শনিবার ঘোষণা করা হয়া। ফলাফল প্রকাশের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাস করা সব শিক্ষার্থী ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ না পেলেও ভর্তির সুযোগ রয়েছে। আমাদের সরকারি-বেসরকারি ও কলেজে পর্যাপ্ত আসন রয়েছে। সবাই সেখানে ভর্তির সুযোগ পাবে। তবে সবার তো অনার্স-মার্স্টাস করার প্রয়োজন নেই, সবাই সে স্তরে যাবেও না। তিনি বলেন, সব জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পাবে, তা নিশ্চিত নয়। ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের স্থান তৈরি করতে হবে। এবার ভর্তি পরীক্ষায় হয়রানি কমাতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করেছিলাম অবস্থার কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন হলে আমরা পরীক্ষাগুলো নেবো। কিন্তু যেভাবে এই অতিমারি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিপুল জনবল, শিক্ষার্থী, অভিভাবক তাদের সবার সাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা নেওয়ায় একেবারে সম্ভব না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেই। ডা. দিপু মনি বলেন, আমরা শিক্ষাকে আনন্দময় করতে চাই। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জন করবে। তারা সঠিক মনোভাব নিয়ে গড়ে উঠবে। সঠিক মূল্যবোধ নিয়ে গড়ে উঠবে এবং তারা সুনাগরিক হবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বে তারা। সেই লক্ষ্যে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় নানাবিধ পরিবর্তন সূচনা করছি। আমরা একটি জাতীয় পরীক্ষা এবং মূল্যায়ন কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছি সেটি পরীক্ষা মূল্যায়নের বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করবে। যাতে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারি। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার একটা বড় অংশ অনেক বেশি পরীক্ষা নির্ভর। ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরার পর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অভিভাবকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ আপনার সন্তানকে অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেবেন না। স্বার্থপর হিসেবে গড়ে তুলবেন না। দেশের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার শিক্ষা যদি আপনার সন্তান না পায়। মনে রাখবেন এই শিক্ষা অর্থবহ হবে না, শিক্ষার আসল উদ্দেশ্যই ব্যহত হবে।