সুদেব কুমার সাহা : কেটে গেলো শঙ্কা। শারীরিক উপস্থিতিতে আগামী ১৮ মার্চ থেকে শুরু হবে অমর একুশে বইমেলা। তবে, এবারের মেলা কত দিনব্যাপী হবে সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। তিনি বলেন, আগামী ১৮ মার্চ থেকে অমর একুশে বইমেলা শুরু হবে। তবে, কবে মেলা শেষ হবে সে বিষয়ে আমরা প্রকাশকদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেবো। তিনি আরও বলেন, আমাদের ইচ্ছে ১৪ এপ্রিল অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত বইমেলা আয়োজন করার। তবে সে সময় রমজান মাস শুরু হয়ে যাবে। সুতরাং আপত্তি উঠলে রমজান মাস শুরুর আগে মেলা শেষ করবো। প্রথা অনুযায়ী, প্রতি বছরের পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা আয়োজিত হয়। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে এ বছর পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরু হবে না বলে আগেই জানিয়েছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর বইমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে ২০২১ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলা সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেসঙ্গে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ভার্চ্যুয়ালি বইমেলার আয়োজনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন লেখক-সাহিত্যিকরা। বাংলা একাডেমির এ সিদ্ধান্তকে ‘একতরফা’ ও ‘স্বেচ্ছাচারী’ বলে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন প্রকাশকরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ ডিসেম্বর সকালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রকাশকদের দুই সমিতি-বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির নেতারা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ভার্চ্যুয়ালি নয়, শারীরিক উপস্থিতিতেই আয়োজিত হবে ২০২১ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। তবে প্রথা অনুযায়ী, পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে এবারের বইমেলা শুরু হচ্ছে না। এজন্য প্রকাশকদের কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয় বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ডিসেম্বর শারীরিক উপস্থিতিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা আয়োজনের জন্য বাংলা একাডেমিকে লিখিত প্রস্তাব দেয় প্রকাশকদের দুই সংগঠন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি। পরে গত ১৭ জানুয়ারি বইমেলার তারিখ নির্ধারণের জন্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংস্কৃতি বিষয় মন্ত্রণালয়, মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির ঊর্ধ্বতনদের পাশাপাশি প্রকাশকদের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষ কে এম খালিদ বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৭ মার্চ ও ২৭ মার্চ প্রস্তাবিত তিন তারিখ প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে। তিনি যে তারিখ নির্ধারণ করবেন, সে তারিখেই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।