দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মন্ত্রিসভা বৈঠক

দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মন্ত্রিসভা বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাস মহামারির প্রকোপ কমে যাওয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম মন্ত্রিসভা বৈঠকে কয়েকজন মন্ত্রী ও সরকারের সচিবের সঙ্গে মুখোমুখি বসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে প্রায় দশ মাস পর গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভা কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংসদের অধিবেশন শেষে এই বৈঠকে মন্ত্রিসভার ছয় জন সদস্য এবং ছয় জন সচিব অংশ নেন। বৈঠকে দুটি আইন ও একটি নীতিমালা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ দিন পর বের হতে পেরেছেন এবং সুস্থ আছেন বলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছেন। তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) সরবরাহ করা ছবিতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর দুপাশে ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। আর সামনের দিকে একপাশে মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ কয়েকজন সচিবকে দেখা যায়। অপর পাশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনসহ কয়েকজন দৃশ্যমান ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আরেকজন কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে এজেন্ডা রিলেটেড ছয়জন মন্ত্রী ও ছয় জন সচিব উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মন্ত্রিসভার সদস্য ও সচিব এবং সংশ্লিষ্টরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বৈঠকে বসেছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মন্ত্রিসভা ও রিপোর্ট অনুবিভাগ) মো. আবদুল বারিক জানান, দীর্ঘ দিন পর মুখোমুখি বসলো মন্ত্রিসভা বৈঠক। কোভিড শুরু হলে একটির পর আর মুখোমুখি বৈঠক হয়নি। আজকে ফিজিক্যাল মিটিং করা শুরু হলো। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্তের পর ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। তবে মন্ত্রিসভা বৈঠক রূপ পায় নতুন আঙ্গিক। মন্ত্রিসভা হচ্ছে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম। সাধারণত প্রতি গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কিংবা সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হতো। আর বিশেষ সময়ে সংসদ ভবনেও বসে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। করোনা সংক্রমণের মধ্যে গত বছরের ৬ এপ্রিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সর্বশেষ মুখোমুখি বসেছিল মন্ত্রিসভা। গণভবনে সীমিত পরিসরে ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে দেখা যায়। সবাই মাস্ক পরে বসেছিলেন আলাদা আলাদা টেবিলে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসসহ কয়েকজন সচিবও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আলাদা টেবিলে ছিলেন। এরপর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে প্রথমবার ভার্চ্যুয়ালি মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ১৩ জুলাই। ওই দিন গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং সচিবরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামও সচিবালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। আর শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে নির্ধারিত আসনে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। আর সচিবালয় প্রান্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কনফারেন্স রুমে যুক্ত ছিলেন মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন