অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, ছাগল ও ভেড়ার ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ পেস্ট ডেস পেটিটস রুমিন্যান্টস (পিপিআর) রোগ নির্মূল ও ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি শুরু হয়। ২০২২ সালে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ২ শতাংশ। ৩৪৫ কোটি দুই লাখ ৯৯ টাকার মধ্যে খরচ হয়েছে ছয় কোটি ৬১ লাখ ৪৭ হাজার। আর সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের জুন মাসে। ২০২৩ সালের জুনে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। এক হাজার ৮৬৮ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ টাকার মধ্যে খরচ হয়েছে ৩৮ কোটি ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।এ ছাড়া ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি ৪২৮ কোটি ৩৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) শুরু হয়। এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর। কিন্তু গত নভেম্বর পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৬ শতাংশ। আর ব্যয় হয়েছে ১৯৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা, যা মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের সাড়ে ৪ শতাংশ। প্রকল্পের জন্য একটি ফোর হুইলার, পাঁচটি ডাবল কেবিন পিক-আপ, একটি মাইক্রোবাস ও ৪১৮টি মোটরসাইকেল কেনা হয়েছে।এ বিষয়ে অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পের জন্য মোটরসাইকেল কেনার কথা জানানো হয়েছে। অথচ আমার উপজেলায় আমি এই প্রকল্পের কোনো মোটরসাইকেল দেখিনি। এগুলো কোথায় তাহলে? প্রকল্প পরিচালক যুগ্ম সচিব, তিনি সরকারি গাড়ি পান। তাহলে আবার প্রকল্পের গাড়ি কেন?’আব্দুস শহীদ আরো বলেন, এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রণোদনা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। কমিটির পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।জানা গেছে, অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে।মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সূত্র জানায়, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন কমিটির সদস্যরা। তারা প্রতিষ্ঠানটির গবেষণার অর্থ লোপাট ও এখতিয়ারের বাইরে একাধিক সরকারি গাড়ি ব্যবহারেরও অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু কমিটির বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সে বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে ওই সব অভিযোগগুলো তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।বৈঠক শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেছেন, ‘প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণার অর্থ নয়ছয় ও মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে আনীত অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। অভিযোগগুলো তদন্তসাপেক্ষে আগামী বৈঠকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ’সূত্র: কালের কণ্ঠ