নিজস্ব প্রতিবেদক : এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালসহ ৬ দফা দাবিতে রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশে সংগঠনটির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম তুষার বলেন, ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক স্বাক্ষরিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সনদ বাতিল করা হয়েছে। এ সনদ বাতিলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে বিতর্কিত করার গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে মনে করি। যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত সনদ বাতিল করা হয়, তাহলে এ দেশ কারা চালায়? তিনি আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ হয়ে যাওয়ার পর ১৯৯৭ সালে এ কোটা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরকে প্রধানমন্ত্রী দিয়েছিলেন। কিন্তু তা বাতিলের মাধ্যমে বিতর্কিত করা হয়েছে। যারা বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদেরকে কড়া জবাব দিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম প্রস্তুত আছে। সমাবেশ থেকে বক্তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করা না হলে কঠোর আন্দোলন ও উচ্চ আদালতে যাওয়ার হবে বলে জানান। এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলো হলো- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; সব সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল, সংরক্ষণ ও বিশেষ কমিশন গঠন করে প্রিলিমিনারি থেকে শতভাগ বাস্তবায়ন এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সংরক্ষিত পদগুলো বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে পূরণসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর সব পদে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, পারিবারিক সুরক্ষা আইন ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে বিশেষায়িত মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতাল নির্মাণ এবং তাদের কল্যাণে মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে হবে; দ্রুত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সংসদের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে; রাজাকারসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ ও তাদের বংশধরদের সব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ নিয়োগে অযোগ্য ঘোষণা এবং চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে চাকরিচ্যুত করতে হবে; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সব অপপ্রচার বন্ধ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে স্বঘোষিত রাজাকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বাসভবনে হামলাসহ সকল প্রকার অরাজকতা সৃষ্টিকারী স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; সব সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মের বয়সসীমা ৩৫ করতে হবে। সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ছাত্রলীগ নেতা ফারদিন আল এহসান, আব্দুল্লাহ আল-মামুন সোহাগ, দেলোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন। এ সময় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।