নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসরকারি পর্যায়ে করোনা ভ্যাকসিন আমদানিতে নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভ্যাকসিন নিয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, প্রাইভেট সেক্টরও ভ্যাকসিন এনে দিতে পারবে, সে বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। সেখানে সবকিছু থাকবে। তারা কীভাবে (ভ্যাকসিন) দেবে, কীভাবে হিসাব রাখবে, কী দামে দেবে। কোন হাসপাতালের মাধ্যমে, কোন ডায়াগনস্টিকের মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেয়া যাবে সেটাও আমরা নির্ধারণ করে দেব। তিনি আরও বলেন, আমরা যে ভ্যাকসিন আনছি তা পুরোপুরি আনা হয়ে গেলে এবং কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন পেয়ে গেলে প্রায় ৫ কোটি লোককে আমরা ভ্যাকসিন দিতে পারব। সে বিষয়ে কাজ চলছে। কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার কোম্পানির কিছু ভ্যাকসিন আমরা পাব। জাহিদ মালেক বলেন, করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভালো করেছে। গত বুধবার ডাব্লিউএইচওর ডিরেক্টর জেনারেলের কাছ থেকে একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন। সেখানে করোনা নিয়ন্ত্রণে ওনার (প্রধানমন্ত্রী) সক্ষমতার কথা তুলে ধরে প্রশংসা করা হয়েছে। তারা ভ্যাকসিনের বিষয়েও আশ্বস্ত করেছেন, ভ্যাকসিন যাতে সুন্দরভাবে ও সঠিকভাবে দেয়া যায় সে বিষয়েও তারা আশা ব্যক্ত করেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন রাখার জন্য যে স্টোরেজ আছে সেটাকেও আমরা বিশেষভাবে তৈরি করছি। সেই স্টোরগুলোর সিকিউরিটি অ্যারেঞ্জমেন্ট হবে। সেটা পুলিশ বা আনসার গার্ড করবে। আমরা এটাও বলেছি ভ্যাকসিন যেখানে রাখা হবে এবং যেই ফ্রিজে রাখা হবে সেটি যাতে সঠিকভাবে চালু থাকে। সেখানে যাতে ঠিকমতো ইলেক্ট্রিসিটি থাকে সেই দিকেও নজর দেয়া হয়েছে এবং সেদিকেও আলোচনা করা হয়েছে। ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য আমরা ইতোমধ্যে টিম গঠন করেছি। ৭ হাজারের বেশি টিম গঠন করা হয়েছে, প্রতিটি টিমে ৬ জন করে থাকবেন যারা এই ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করতে পারবেন।
ভ্যাকসিন প্রয়োগে ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ : ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য আমরা ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এর মধ্যে টেকনোলজিস্ট, নার্স, মিডওয়াইফ ও ভলান্টিয়ার। ভ্যাকসিন যাতে সুন্দরভাবে দেয়া যায় সেজন্য একটি অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে। আইসিটি মন্ত্রণালয় এটি তৈরি করছে। আমরা তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছি। অ্যাপসের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রার্থী নিবন্ধন করতে পারবেন। সেখানে কিছু তথ্য দিলে তিনি নিবন্ধিত হবেন। পরে তিনি ভ্যাকসিন গ্রহণের সময় ও স্থান পাবেন। সেখানে নিয়ম মেনে উপস্থিত হলে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। জাহিদ মালেক আরও বলেন, আমরা কাদের ভ্যাকসিন দেব, তা আগেও বলেছি। যারা ফ্রন্টলাইনাররা; যেমনÑ চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, সাংবাদিক, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কাররা আগে পাবেন। আমরা ৫৫ থেকে বেশি বয়স্কদের পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন দেয়ার চিন্তাভাবনা করছি। তিনি বলেন, আগামী ২৫-২৬ জানুয়ারির মধ্যে সেরামের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের প্রথম লট আসার কথা। ভ্যাকসিন আসলে তা ট্রান্সপোর্ট ও স্টোরেজ করার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক জেলায় যে স্টোরেজের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে ৭ লাখ ডোজের বেশি ভ্যাকসিন রাখা সম্ভব হবে। উপজেলা পর্যায়ের স্টোরেজে আমরা দুই লাখের অধিক ডোজ রাখতে পারব। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ যথাযথভাবে বাস্তবায়নে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন জাতীয় কমিটি করা হয়েছে। মুখ্য সচিব এই কমিটির প্রধান থাকবেন। তার নেতৃত্বে ভ্যাকসিন কমিটি কাজ করবে। জেলা, উপজেলা পর্যায়েও কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।