ঢাকা: জঙ্গিবাদকে ভুল পথ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন জঙ্গিবাদ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রত্যয়ে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণকারী নারী জঙ্গি আবিদা জান্নাত আসমা। স্বামীর প্ররোচণায় ভুল পথে পা বাড়ানো আসমা এসময় স্বামীকেই ফিরে আসার আহ্বান জানান।বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর র্যাব সদর দপ্তরে ‘নব দিগন্তের পথে’ শীর্ষক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণের পর এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন তিনি।অনুষ্ঠানে নয়জন জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেন, এদের মধ্যে ছয়জন জেএমবির এবং তিনজন আনসার আল ইসলামের সদস্য ছিলেন।আসমা বলেন, জঙ্গিবাদ ভুল পথ। সবাই নিজেকে জানুন, নিজের মতকে প্রাধান্য দিন। যাতে কারো প্ররোচণায় জঙ্গিবাদের ফাঁদে পড়তে না হয়। অন্যদের কথা যেন আমরা অন্ধভাবে বিশ্বাস না করি।নিজের জঙ্গিবাদে জড়ানোর প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে আমি এসএসসি পাস করি। তার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার সঙ্গে অনেক জায়গায় দেখা করতাম। ২০১৮ সালে পরিবারকে না জানিয়ে তাকে বিয়ে করি।এসএসসি পাসের পর পরিবারের কাউকে না জানিয়েই পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাই। আমার স্বামীও আমার সঙ্গে যায়। যদিও এটা তারই পরিকল্পনা ছিল, যেটা আমি বা পরিবারের কেউ জানতো না।আবিদা জান্নাত আসমা বলেন, ছয়মাস পর আমরা আবার দেশে ফিরে আসি। এরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে থাকি। মূলত এই সময়ে জানতে পারি আমার স্বামী জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সেও আমাকে তার কাজে সহযোগিতা করতে বলে। তার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে আমিও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাই। কিন্তু আমি যে ভুলপথে পা বাড়িয়েছি তা ধীরে ধীরে বুঝতে পারি।‘একটি স্বাভাবিক জীবনের বাবা-মায়ের আদর, স্নেহ, ভালোবাসা সবকিছু ছেড়ে বন্দি জীবনযাপন করতে হয়। যে মানুষটি ভালোবেসে স্বপ্ন দেখিয়ে আমাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সেও কষ্টের জীবনযাপন করছিল। সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কষ্টের জীবন বেছে নিতে হয়। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে আমি র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেই। এক পর্যায়ে আমি পালিয়ে এসে একাই র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করি। এজন্য র্যাবকে ধন্যবাদ জানাই। জঙ্গিবাদ ভুল পথ, এই পথ ছেড়ে আমার স্বামীকেও আত্মসমর্পণ করার জন্য আহ্বান করছি।