নিজস্ব প্রতিবেদক : জঙ্গিদের শুধু কঠোর হস্তে দমনই নয়, ডির্যাডিকালাইজেশনের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর র্যাব সদর দপ্তরে নয় জন জঙ্গির আত্মসমর্পণ উপলক্ষে ‘নব দিগন্তের পথে’ শীর্ষক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। আত্মসমর্পণ করা জঙ্গিদের মধ্যে ৬ জন জেএমবির এবং ৩ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু জঙ্গিবাদ কঠোর হস্তে দমন করছি তাই নয়, পাশাপাশি ডির্যাডিকালাইজশনের মাধ্যমে তাদের ভুল পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন তাদের ট্রাক্টর, কৃষিজ উপকরণ, নগদ টাকা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ কখনো জঙ্গিবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন জিরো টলারেন্সের কথা। এটা আমরা কখনো বলি না জঙ্গিবাদকে মূলোৎপাটন করেছি। বলেছি জঙ্গিবাদকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। অনেক দেশ থেকে আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, তোমরা কিভাবে জঙ্গিবাদকে মোকাবিলা করছো? আমি বলেছি, বাংলাদেশের জনগণ কখনো জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না বলেই আমরা জঙ্গিবাদকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। একের পর এক জঙ্গির উত্থান যখন হচ্ছিল, আমরা সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রী দেশের কৃষক, শ্রমিক-শিক্ষকসহ দলমত ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঘুরে দাঁড়াবার জন্য ডাক দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সবাই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, মানববন্ধন হয়েছে, সমাবেশ হয়েছে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। স্কুলের ছাত্ররাও গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুঁলিয়েছিল জঙ্গিবাদকে সমর্থন করি না। তিনি বলেন, পঞ্চগড়ে হিন্দু ইস্কন মন্দিরে পুরোহিতকে হত্যা, বৌদ্ধ পুরোহিতকে হত্যা, শিয়া মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ঈমামকে গুলির দৃশ্য দেখেছিলাম। এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে র্যাব এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আজ তারই প্রতিফলন এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান। নয় জঙ্গির আত্মসমর্পনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা বিভ্রান্ত হয়েছিল, পথ হারিয়েছিল, যারা ভুল পথে ভুল আদর্শ বুকে নিয়েছিল তারা আজ বাবা মার কাছে ফিরেছেন, বাবা মার মুখে হাসি ফুটিয়েছেন, যা অনেক দিন পর দেখছি। এজন্য র্যাবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নয় জঙ্গি। এ সময় মন্ত্রী ফিরে আসা নয়জনকে তাদের অবিভাবকের হাতে তুলে দেন এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য সহায়তা দেন।