নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি মাধ্যমিকে ভর্তির ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ২৯০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২১ শিক্ষা বর্ষে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে লটারি অনুষ্ঠানের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হয়। শিক্ষামন্ত্রীর অনুমতিক্রমে ডিজিটাল লটারি উদ্বোধন করতে কম্পিউটারের মাউসে ক্লিক করেন আজিমপুর সরকারি গার্লস স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাদিয়া আনহু তানহা। সঙ্গে সঙ্গে সফটওয়্যার ডিজিটালি শিক্ষার্থী বাছাই শুরু করে এবং শিক্ষার্থী নির্বাচন সস্পন্ন হয়। অনুষ্ঠিত লাটারির ফল পায়া যাবে যঃঃঢ়://মংধ.ঃবষবঃধষশ.পড়স.নফ ওয়েবসাইটে। অনিষ্ঠানে জানানো হয়েছে, সারা দেশে সরকারি স্কুলে ৮০ হাজার আসনের বিপরীতে ভর্তির জন্য ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৯ জন শিক্ষার্থীর আবেদন জমা পড়ে। মোট আসন রয়েছে ৭৭ হাজার ১৪০টি। দেশব্যাপী ৩৯০টি বিদ্যালয়ের জন্য ডিজিটাল লাটারি অনিষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া নতুন জাতীয়করণ করা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় কমিটির মাধ্যেম লটারি করা হবে। অনুষ্ঠানের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এক কঠিন পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে গত বছরের মার্চ মাস থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষণ-শিখন কাজ থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য আমরা সংসদ টিভির মাধ্যমে দূর শিক্ষণ, অনলাইন পাঠদান এবং অ্যাসাইনমেন্টভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। যা খুবই সফল ও প্রশংসিত হয়েছে বলে মাঠ পর্যায় থেকে জানতে পেরেছি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্কুলগুলোতে যেহেতু বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি, সেহেতু সরকারিভাবে আমরা এ বছর লটারির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ প্রক্রিয়ায় বেসরকারি স্কুলগুলো এবং সম্প্রতি জাতীয়করণকৃত অনেক স্কুল স্থানীয়ভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুসরণ করে ভর্তির কাজ লটারির মাধ্যমে সম্পন্ন করছে। আর ৩৯০টি সরকারি স্কুলে ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৯ জন আবেদনকারী ভর্তিচ্ছুকদের মধ্য থেকে সারাদেশে মোট ৭৭ হাজার ১৪০টি শূন্য আসনের বিপরীতে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে আজ ভর্তি নির্বাচন করার জন্য আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। এ প্রক্রিয়ার একটি ভালো দিক হলোÑ সকল স্কুলে এবার নানা ধরনের মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবে। এ ডিজিটাল লটারির সার্বিক কারিগরি সহায়তার কাজ করেছে টেলিটক বাংলাদেশ এবং টেলিটকের সফট্ওয়্যার এর যথার্থতা যাচাই-বাছাই করেছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো গোলাম ফারুকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত হতে পারেননি। এবারও স্কুলগুলোকে তিনটি গুচ্ছ বা গ্রুপ (এ, বি এবং সি) করে ভর্তির কাজটি করা হবে। ভর্তি আবেদনের সময় একজন শিক্ষার্থী একটি গুচ্ছের পাঁচটি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পেরেছে। এবার বিভাগভিত্তিক আবেদন ছিল ঢাকা বিভাগে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬১০টি, বরিশালে ১৬ হাজার ২৮৭টি, চট্টগ্রামে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৫৮টি, রাজশাহীতে ৭০ হাজার ৮১২, খুলনায় ৪৩ হাজার ৫০৬টি, রংপুরে ৬৯ হাজার ৫২৩টি, সিলেটে ২৪ হাজার ৫৭৩ এবং ময়মনসিংহে ৪৯ হাজার ৬০টি আবেদন রয়েছে। অন্যদিকে শ্রেণিভিত্তিক আবেদন ছিল প্রথম শ্রেণিতে ৪২ হাজার ৩৭২টি, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২ হাজার ৬৮৫টি, তৃতীয় শ্রেণিতে ১ লাখ ৪৮ হাজার ১৯৪টি, চতুর্থ শ্রেণিতে ২২ হাজার ৯৬৮টি, পঞ্চম শ্রেণিতে ৩৬ হাজার ৭৩৪টি, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৬টি, ৭ম শ্রেণিতে ১১ হাজার ৫৩১টি, ৮ম শ্রেণিতে ২১ হাজার ৩৯৩টি এবং ৯ম শ্রেণিতে ৩৫ হাজার ৫৩৬টি।