নিজস্ব প্রতিবেদক : রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় বিচারিক (নিম্ন) আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল আবেদন শুনানির জন্য আগামী ১৪ মার্চ দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। শুনানির জন্য কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) থাকা আপিল আবেদনের বিষয়ে গতকাল রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে শুনানি করেন মোহাম্মদ শিশির মনির। শাহীন আহমেদ খান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সময় আর্জি জানানোর পরে আগামী ১৪ মার্চ দিন ঠিক করেছেন। এর আগে ২০১৪ সালের (নিম্ন) বিচারিক আদালতের রায় ঘোষণার পর মামলাটি মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আমির ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে, ওই মামলায় আসামিদের পক্ষ থেকে জেল আপিলও করা হয়। পরে বিজি প্রেস থেকে পেপারবুক প্রস্তুত করে মামলাটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের বেঞ্চ নির্ধারণ করেন প্রধান বিচারপতি। এরপর এই মামলা রোববারের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) ছিল। সেই শুনানি পিছিয়ে দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় বিচারিক আদালত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মুফতি আবদুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আবদুল হাই ও মাওলানা শফিকুর রহমান। এর মধ্যে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। অভিযুক্ত মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে কার্যকর হয়। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন ও মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক রয়েছেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল, মাওলানা সাব্বির, শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা ইয়াহিয়া ও মাওলানা আবু তাহের। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (বাংলা ১৪০৮ সনের ১ বৈশাখ) রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় ঘটনাস্থলেই নয়জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে একজনসহ মোট ১০ জন ঘটনার দিন মারা যান। এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা করেন। ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হলেও এই ঘটনায় দায়ের হওয়া বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটি ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।