বিশ্বের বুকে প্রথম বাংলা ভাষার টেলিভিশন ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন-বিটিভি’ যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর। শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিটিভি’র ৫৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
১৯৬৪ সালে তৎকালীন ঢাকা শহরের ডিআইটি ভবনের নিচতলায় এনইসি কর্পোরেশন জাপানের সহায়তায় বিটিভি আত্মপ্রকাশ করেছিল। ১৯৬৭ সালে টেলিভিশন কর্পোরেশন ও স্বাধীনতা-উত্তর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে বাংলাদেশ টেলিভিশন একটি সরকারি গণমাধ্যমে রূপান্তরিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে ১৯৭৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিআইটির ক্ষুদ্র পরিসর থেকে রামপুরার বৃহত্তর পরিমণ্ডলে টেলিভিশন কেন্দ্র স্থানান্তর করা হয়। সারাদেশের নানা প্রান্তের বিটিভির ১৪টি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠান রিলে করা হয়ে থাকে। ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি নতুন পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপিত হয়। পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় শহরগুলোয় বিটিভির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র চালু করার কাজ প্রক্রিয়াধীন। এপ্রিল ২০০৪ থেকে পৃথক চ্যানেলে বিটিভি ওয়ার্ল্ড দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত হয়। ৫ নভেম্বর ২০১২ থেকে বিটিভির অনুষ্ঠানমালা দর্শকদের জন্য স্যাটেলাইটে ২৪ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিযোগিতার এ যুগে অসংখ্য স্যাটেলাইট চ্যানেলের ভিড়ে বিটিভি এখনও স্বতন্ত্র। অনুষ্ঠান পরিকল্পনা, নির্মাণ ও সম্প্রচারের প্রতি ক্ষেত্রেই বিটিভি দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ভাষা ও মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়কে উপজীব্য করে অনুষ্ঠান প্রচারের পাশাপাশি নির্মল আনন্দদায়ক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করে আসছে। ১৯৬৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বিটিভির অনুষ্ঠান পরিকল্পনা, নির্মাণ, মঞ্চসজ্জা ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। থাইস্যাট-এর সহায়তায় বিটিভি মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিটিভি প্রথম স্যাটেলাইট সম্প্রচার শুরু করে। দূরদর্শন-এর ডিটিএইচ প্লাটফর্মের মাধ্যমে ভারতে বিটিভি ওয়ার্ল্ড এর সম্প্রচার হচ্ছে। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র দেড় ঘণ্টা থেকে বর্তমানে ১২ ঘণ্টা সম্প্রচারিত হচ্ছে। খুব দ্রুতই এখানে ১৮ ঘণ্টা সম্প্রচার শুরু হবে এবং পরবর্তীতে ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচারে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।এই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় করোনাকালীন সময়েও গণমাধ্যম হিসেবে বিটিভি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন- ‘বদলে যাবে বদলে দিবে’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বিটিভিকে আরও গণমুখী করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।