কনকনে শীতের মধ্যেও থেমে নেই ইটভাটা শ্রমিকদের কাজ

কনকনে শীতের মধ্যেও থেমে নেই ইটভাটা শ্রমিকদের কাজ
মানিকগঞ্জ: সারাবিশ্ব যখন করোনার দ্বিতীয় ধাপে আতঙ্কিত ঠিক তখন পৌষের উত্তরের কনকনে শীতল বাতাসের মধ্যেও থেমে নেই ইট ভাটার শ্রমিকদের কাজ। ভোর রাত থেকে শুরু করে সকাল ৯টা পর্যন্ত টানা কুয়াশার মধ্যে ইট তৈরির কাজ করে যাচ্ছে।এতে করোনা সংক্রমণে সম্ভবনা থাকলেও জীবিকার তাগিদে ধুমছে চলছে তাদের কাজ।শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধূসর কুয়াশার চাদরে ঢাকা আশপাশ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বের হচ্ছে না। শীত নিবারনের পোশাক পরে বের হচ্ছে কাজে অন্য পেশার মানুষ সেখানে পাতলা একটি মাত্র গেঞ্জি পরে ভাটায় ইট তৈরির কাজ করছেন শ্রমিকরা। নেই কারো মুখে মাস্ক, তাদের দেখলে মনেই হয় না করোনা নামক কোনো ভাইরাস বিশ্বকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এতো শীতের মধ্যেও কোনো ক্লান্তি ছাড়া কাজ করে চলছেন তারা।সাতক্ষীরা এলাকার আকরাম মিয়া বাংলানিউজক বলেন, ‘রাত আড়াইটার দিকে ওঠে কাজে যোগ দিই। এরপর সাড়ে ৩টার দিকে এক টানা সকাল ৯টা পর্যন্ত কাজ করি। ’ একদিকে করোনা আতঙ্ক তারপর এতো শীতের মধ্যে কিভাবে কাজ করছেন এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ আমাগো আবার শীত আর করোনা কিসের। কাজ না করলে দেশের বাড়িতে মা-বাবা, বৌ-বাচ্চা না খেয়ে মরবে, যেহেতু পুরুষ মানুষ হয়ে জন্মেছি মৃত্যু পর্যন্ত কাজ করে যেতে হবে তাই এ করোনা-টরুনা নিয়ে ভাবার সময় নেই। ’
আবুল নামে আরো এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা যারা ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করি তাদের মধ্যে অধিকাংশই দাদন নেওয়া (অগ্রিম টাকা পরিষোধ) যে কারণে যত দ্রুত সম্ভব কাজ তুলতে পারলে অন্য কোনো কাজ করতে পারবো। যারা প্রতিদিন মজুরিভিত্তিক হিসেবে কাজ করে তারা গড়ে ৪-৫শ’ টাকার বিনিময়ে কাজ করে থাকে। যে পরিমাণ কষ্ট সেই পরিমাণে মজুরি না তবুও কাজ করতে হয় তা না হলে না খেয়ে মরতে হবে। এই কাজের আগে দেশের বাড়িতে রিকশা ভ্যান ও অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালিয়েছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইটভাটার ব্যবস্থাপক বলেন, করোনা আর শীতের মধ্যে এসব গরীব মানুষগুলো ভোর থেকে ইট তৈরি কাজ করে। আমরা কয়েকটি লাইনের শ্রমিকদের জন্য মাস্ক দিয়েছি কিন্তু তারা (শ্রমিক) ব্যবহার করতে চায় না। ইট তৈরির কাজ অনেক পরিশ্রমের যার কারণে অনেকে শীতের পোশাক পড়তে চায় না কারণ কিছু সময় পর শরীর গরম হয়ে যায়। তবে সকলের এই সময়ে করোনার সচেতন থাকাটা উচিত কিন্তু আমরা তাদের (শ্রমিক) সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারি না। আমাদের কাছে ওই পরিমাণ টাকা নাই যে কারণে আফসোস ছাড়া আর কিছুই করতে পারি না তবে মালিকরা ইচ্ছে করলে তাদের জন্য ভালো কিছু ব্যবস্থা করতে পারে। মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ বলেন, প্রচণ্ড শীত আর কুয়াশার কারণে শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে মানুষ। এজন্য আমাদের সবাইকে সর্তক হয়ে চলাফেরা করতে হবে। শীতের মধ্যে করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে। সে কারণে মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আমাদের চলাফেরা করতে হবে। যেহেতু করোনার প্রার্দুভাব এখনো আছে তাই শীতের মধ্যে ইট ভাটার শ্রমিকদের মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি সতর্কতা অবলম্বন  করতে হবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন