নারীদের এগোতে না দিলে সমাজ খুঁড়িয়ে চলবে: প্রধানমন্ত্রী

নারীদের এগোতে না দিলে সমাজ খুঁড়িয়ে চলবে: প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা: নারীরা সমাজের অর্ধাংশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নারীদের যদি এগোতেই না দেই, তাহলে সমাজকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হবে।বুধবার (৯ ডিসেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন ও বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “একটা সমাজের অর্ধাংশ নারী। সমাজ উন্নত করতে হলে সেখানে নারীদের সমানভাবে তৈরি করতে না পারলে সেই সমাজ কীভাবে গড়ে উঠবে? সমাজের অর্ধাংশ নারীদের যদি এগোতেই না দেই, তাহলে কী করে একটা সমাজ দাঁড়াতে পারে। সমাজকে তো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হবে। ” নারীদের সামনে এগিয়ে নিতে সরকারের আন্তরিকতা ও বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ আমাদের মেয়েরা অনেক এগিয়ে গেছে। আমরা চাই আমাদের দেশের মেয়েরা সমানভাবে এগিয়ে যাক। কারণ বেগম রোকেয়াই আমাদের পথ দেখিয়ে গেছেন। ”বেগম রোকেয়া তৎকালীন সমাজের নারীদের আলোর পথ দেখিয়েছিলেন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “তিনি (বেগম রোকেয়া) সমাজে একটা বিবর্তন নিয়ে এসেছিলেন। অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে তিনি এই দেশের নারী সমাজকে এগিয়ে নিয়ে আসেন এবং তাদের শিক্ষায় আলোকিত করেন। ”বেগম রোকেয়ার লেখা উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, “বেগম রোকেয়া বলতেন, কন্যাগুলিকে সুশিক্ষিত করিয়া কার্যক্ষেত্রে ছাড়িয়া দাও। নিজের অন্ন-বস্ত্র উপার্জন করুক। ”প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কষ্ট করেই তিনি (বেগম রোকেয়া) শিক্ষার আলোটা জ্বালিয়ে দিয়ে যান আমাদের জন্য। যার জন্য আজ আমরা বলতে পারি, আমরা মেয়েরা অনেক সুযোগ পেয়েছি। ” নিজের মা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমার মা, যিনি সারাজীবন আমার বাবার পাশে থেকে এই স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। যখন আমার বাবা জেলে থাকতেন তখন দল গঠন থেকে শুরু করে আন্দোলন সংগ্রাম করা বা তার মামলা মোকাদ্দমা দেখা বা আমাদের মানুষ করা, লেখাপড়া শেখানো সব দায়িত্ব কিন্তু আমার মা নিজে করেছেন। ”
নিজের মায়ের জ্ঞান পিপাসার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “কোনো প্রতিষ্ঠনিক শিক্ষার সুযোগ তার ছিল না, কারণ সেই সময়কার যুগে মেয়েরা একটু বড় হলে আর তাদের স্কুলে যেতে দেওয়া হতো না, পড়তে দেওয়া হতো না। সেখানে আমি দেখেছি আমার মা খুব জ্ঞানপিপাসু ছিলেন এবং নিজের চেষ্টায় তিনি অনেক লেখাপড়া করতেন। আমাদের সব সময় লেখাপড়া করতেও তিনি উৎসাহিত করতেন। ” এ বছর নারী শিক্ষায় প্রফেসর ড. শিরীন আখতার, পেশাগত উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) নাজমা বেগম, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মঞ্জুলিকা চাকমা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে বেগম মুশতারী শফি (বীর মুক্তিযোদ্ধা) এবং নারী অধিকারে অবদানের ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে পদকপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা পদক, সনদ ও চেক তুলে দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।এসময় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শিশু একাডেমি মিলনায়তন প্রান্তে অন্যদের মধ্যে ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার।১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে জন্মগ্রহণ করেন বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি কলকাতায় মারা যান।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন