‘বিজিবিকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে’

‘বিজিবিকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে’

নবীন সৈনিকদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সীমান্তে চোরাচালান রোধে তোমাদের পেশাগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সুশৃঙ্খল ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। তোমাদের সকলের কর্মজীবন সফল হোক সেই কামনা করছি।তিনি বলেন, সেবা ও কর্তব্যপরায়ণতার মাধ্যমে এই বাহিনীর সদস্যরা জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও একইভাবে জনকল্যাণমূলক কাজে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।তিনি বলেন, বিজিবির সদস্য ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা সেবার জন্য ৫টি হাসপাতালকে আরও উন্নত করা হয়েছে। বিজি হাসপাতাল, ঢাকায় একটি অত্যাধুনিক ক্যাথ ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।শৃঙ্খলা সৈনিকের মূল পরিচিতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে নির্ভীক সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, সাহস ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের মধ্যে তারই প্রতিফলন আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত ও মুগ্ধ করেছে।

৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের সব সদস্যকে সফলভাবে তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করায় অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব বিষয়ে সেরা নবীন সৈনিক হিসেবে (বক্ষ নম্বর-৪৩১) রিক্রুট মো. খোকন মোল্লা’কে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। পাশাপাশি, (বক্ষ নম্বর-৬৮৭) রিক্রুট হাসিনা আক্তার বিথি শ্রেষ্ঠ ফায়ারার হওয়ায় তাকেও অভিনন্দন জানাচ্ছি। তোমরা প্রশংসনীয় ও তেজদীপ্ত কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেছো। আমি আশা করি, আজ যারা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পরিবারভুক্ত হয়েছো তারা নিজেদের চরিত্রে মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটাবে এবং লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে অর্পিত দায়িত্ব পালনে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর চারটি মূলনীতি-‘মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতায়’ উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে তোমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠা ও সুচারুভাবে পালন করতে হবে। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সীমান্ত প্রহরা ও সুরক্ষার মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষা করা। এ পবিত্র দায়িত্ব পালনে তোমাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দায়িত্ব পালনে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সমান ভূমিকা রাখতে হবে। ভয়হীন হয়ে নারীদের সীমান্তে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেবা ও কর্তব্যপরায়ণতার মাধ্যমে এই বাহিনীর সদস্যরা জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও একইভাবে জনকল্যাণমূলক কাজে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। ’তিনি বলেন, আজ এই মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ এবং সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বিজিবি মহাপরিচালক, বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের কমান্ড্যান্ট এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও এর নবীন সৈনিকদের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করছি।

এবছর ১৪ জুন থেকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যঅন্ড কলেজে (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি)-সহ আরও ৬টি প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এতে বিজিটিসিঅ্যান্ডসিতে প্রশিক্ষণ নেওয়া ৭৯১ জন রিক্রুট মধ্যে ৫৯০ জন পুরুষ এবং ২০১ জন নারী রিক্রুট রয়েছেন। এদিকে বাকি ৬টি প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের ১ হাজার ৭৩৩ জন রিক্রুট রয়েছেন।দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের অত্যন্ত কঠোর ও কষ্টসাধ্য এ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে আনুষ্ঠানিক সর্বমোট ২ হাজার ৫২৪ জন রিক্রুট (নারী-পুরুষ) শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের সৈনিক জীবনের শুভ সূচনা করেছেন।শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বিজিবির ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।  প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের প্যারেড কমান্ডার প্যারেড পরিচালনা করেন ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের অফিসার ইনচার্জ মেজর কাজী মনজুরুল ইসলাম। প্যারেড এ্যাডজুটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক বেগ আব্দুল্লাহ আল মাসুম।কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে ৯৫তম রিক্রুট সৈনিকদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকষ রিক্রুট হিসেবে ১ম স্থান অধিকারী (বক্ষ নম্বর ৪৩১) রিক্রুট (জিডি) মো. খোকন মোল্লার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। এসময় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সংসদ সদস্য, সেনাবাহিনী ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন