নিজস্ব প্রতিবেদক ; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের অনেক প্রকল্প, বিশেষ করে নির্মাণ প্রকল্পে দেরি হয়ে যায়। এই দেরির একটা কারণ হলো একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনেকগুলো কাজ পেয়ে থাকে। মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কে কতগুলো কাজ পেয়েছে, কাজ সময়মতো শেষ করেছে কি না, কোন সময় শেষ করেছে, এসবের একটি তালিকা সব মন্ত্রণালয় তৈরি করবে এবং তা প্রকাশ করতে হবে। (চলমান) কাজ শেষ করলে পরের কাজ পাবে। এর দুটি উদ্দেশ্য। একটি হলো আমাদের নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে নির্মাণ কাজের জন্য, মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমিত থাকবো না। দ্বিতীয়ত সময়মতো আমাদের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব নির্দেশনা দেন। সভা শেষে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে প্রধানমন্ত্রীর এসব বক্তব্য তুলে ধরেন পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সদস্য মো. আসাদুল ইসলাম। সড়কের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে সচিব বলেন, রাস্তা বাড়ানো হচ্ছে। রাস্তাকে টেকসই এবং ভালো রাখার জন্য রাস্তার পাশে জলাধার কিংবা বৃষ্টির পানি নামার ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তার পাশে গাছ লাগাতে হবে। বিশেষত হাইওয়ের পাশে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষত যারা লং ড্রাইভ করেন বা অন্যান্য যারা দীর্ঘসময় ধরে রাস্তায় থাকেন, তাদেরকে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ ও লাগসই প্রযুক্তি হস্তান্তর’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব বলেন, এ প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা অত্যন্ত ভালো প্রকল্প। ভুট্টা চাষের ফলে গো খাদ্যের উন্নতি হয়েছে। সেটা উৎসাহিত করা হবে। এই প্রকল্পে যেটা উন্নত জাতের ঘাস, যেটা আমাদের জন্য লাগসই, জমির ও প্রাণীর জন্য লাগসই, সেটা ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ’ প্রকল্পেরও অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রকল্প সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘এ প্রকল্প সম্পর্কে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, এখানে যারা জলবায়ু উদ্বাস্তু কিংবা বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা করতে হবে। তাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ওখান যে আবাসন তৈরি হয়েছে, সেই আবাসনে তাদেরকে পুনর্বাসন করতে হবে। ওই তালিকাভুক্তদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ, এমনও হতে পারে সরকারি আবাসন তৈরি হয়েছে দেখে অন্যান্য জায়গা থেকে লোকজন এসে সেখানে আবাসনের জন্য চেষ্টা করতে পারে। এদিকে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেনে, করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও সেটার দেয়ার জন্য আমাদের ভালো করে ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু ভ্যাকসিন আমদানিই নয়, অনেক সংখ্যক মানুষকে দিতে হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আরও নির্দেশনা তুলে ধরে সচিব বলেন, ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া, সময়মতো পৌঁছানো, কোল্ড চেন মেনটেন (ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে হিম তাপমাত্রা ঠিক রাখা) করা, যাতে কার্যকরভাবে কাজটি করা যায়। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন দেয়ার ফলে যে বর্জ্য তৈরি হবে, (সিরিঞ্জ, তুলা ইত্যাদি) সেগুলো যেন ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়, সে লক্ষ্যে ব্যবস্থা রাখতে হবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যথাযথভাবে মোকাবিলা করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।