বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে ক্ষতিকর মাছ

বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে ক্ষতিকর মাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে সামুদ্রিক মাছে অতিমাত্রায় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকা মাছ। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। সঠিক প্রক্রিয়ায় আমদানিকৃত ওসব মাছের রেডিয়েশন ও ফরমালিন পরীক্ষা হয় না। ফলে মাছে থাকা ভারী ধাতু, আর্সেনিক, পারদ, সিসা ও ক্যাডমিয়ামের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক ধরা পড়ে না। ফলে তা মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ছে। মূলত মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে আমদানি করা সামুদ্রিক মাছেই অতিমাত্রায় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকার তথ্য মিলেছে। আর ওসব মাছ কাস্টমস খুব সহজেই খালাস দিচ্ছে বলে জানা যায়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার ফখরুল ইসলাম গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন- আমদানি হওয়া মাছের দুটো পরীক্ষা করানো হয়। এর মধ্যে রেডিয়েশন পরীক্ষা করে পরমাণু শক্তি কমিশন। আর ফরমালিন পরীক্ষা করে মৎস্য অধিদফতর। এই দুই প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নিয়ে আমদানি করা মাছ খালাস দিচ্ছে কাস্টমস। এদিকে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, আমদানি করা মাছে বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ পরীক্ষা করে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে চার-পাঁচ গুণ বেশি রাসায়নিক পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান, ইয়েমেন, কাতার, দুবাই ও পাকিস্তান থেকে সামুদ্রিক মাছ আমদানি করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সাগর থেকে তেল উত্তোলনের জন্য অনেক রিগ বসানো হয়েছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের ওই অঞ্চলে তেল মিশ্রিত পানির জন্য বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠে। আর বাংলাদেশে ওই দেশগুলো থেকেই অধিকাংশ সামুদ্রিক মাছ আমদানি করা হচ্ছে। ওসব মাছের মাইক্রোবায়োলজি বা জীবাণু পরীক্ষা ছাড়াও আর্সেনিক এবং মারকারি বা পারদ পরীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে। তবে জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে ওমান ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আমদানি হওয়া মাছ বিশেষ পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
সূত্র জানায়, সামুদ্রিক মাছ আমদানির ক্ষেত্রে ফরমালিন পরীক্ষায় হেভি মেটাল বা ভারি ধাতুসহ আর্সেনিক, মারকারি বা পারদ, লেড বা সিসা ও ক্যাডমিয়াম ধরা পড়ে না। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওসব দেশ থেকে আমদানি হওয়া মাছ খালাসের আগে মাইক্রোবায়োলজি বা জীবাণু পরীক্ষা ছাড়াও আর্সেনিক এবং মারকারি বা পারদ পরীক্ষা করার শর্ত আরোপ করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নূরুল কাইয়ুম খান জানান, আমদানি করা মাছের রেডিয়েশন ও ফরমালিন পরীক্ষা সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। ফলে পরীক্ষায় ফরমালিন, আর্সেনিক ও কেমিক্যাল ধরা পড়ে না। এ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিকযুক্ত মাছের ২০ থেকে ২৫টি কনটেইনার এ বছরের গোড়ার দিকে ধরাও পড়েছিল। তারপর শর্ত আরোপের দাবি জানিয়ে মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন গত ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন