নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২১ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৫ জন ও নারী ৬ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ২০ জন ও বাড়িতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ হাজার ২১৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৬টি ল্যাবরেটরিতে ১৬ হাজার ২১৮টি নমুনা সংগ্রহ ও ১৫ হাজার ৭৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৬২টি। এ সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ২ হাজার ১৩৯ জন। এতে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪৭২ জনে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৬০৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ১৪৬ জন। গতকাল সোমবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক শূন্য ৫৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮২ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৩ শতাংশ। মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২১ জনের মধ্যে চল্লিশোর্ধ্ব ৬ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব একজন এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রয়েছেন ১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২১ জনের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগ- ঢাকা ১৩ জন, চট্টগ্রামে ৪, রাজশাহীতে একজন এবং রংপুর ৩ জন রয়েছেন। দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর বিশে^ গত বছরের শেষের দিকে চীনে প্রথম করোনা ভাইরাসের আক্রমণ হয়। তারপর থেকে বিশ্বে প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণের প্রকোপ বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫ কোটি ৪৮ লাখ ৬৩ হাজার ৮৬৫ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৯২ জন। তবে এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৩ কোটি ৮১ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৩ জন। গত ডিসেম্বরে করোনা সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। তবে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে এখনও শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ধারে-কাছেও নেই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে সংক্রমণ আবারও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে দেখা গেছে। এক সপ্তাহেরও কম সময়ে দেশটিতে সংক্রমণ ১০ লাখে পৌঁছেছে। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে ইতোমধ্যেই অনেক অঙ্গরাজ্য ও শহরে নতুন করে বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে। এদিকে, গতকাল সোমবার থেকে শিকাগোতে ‘স্টে অ্যাট হোম’ নির্দেশনা জারি হচ্ছে। গত ৯ নভেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ ছিল ১ কোটি। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই দেশটিতে আরও প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ ২৫ হাজার ৪৬। তবে ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩৭৯। এর মধ্যে মারা গেছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৯০২ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ৬৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৩৬ জন। বর্তমানে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ৪১ লাখ ৭৮ হাজার ৯১৭। অপরদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে ৭০৩ জন। এদিকে, করোনা সংক্রমণে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৭। এর মধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ৩০ হাজার ১০৯। ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ৫৭৯ জন। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে আরও ৪৩৫ জন। তবে ভারতে গত ৪ মাসের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণ সবচেয়ে কমেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩০ হাজার ৫৪৮ জন। এর আগে গত জুলাই মাসের ১৫ তারিখে সবচেয়ে কম সংক্রমণ দেখা গেছে। সে সময় দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৩০ হাজারের কম। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ৪২৯। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯৩। এর মধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৮১১ জন। অপরদিকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৫২ লাখ ৯১ হাজার ৫১১ জন। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ৮১ হাজার ৮২৭। এর মধ্যে মারা গেছে ৪৪ হাজার ৫৪৮ জন। এ ছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮১০ জন। রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ৪৮ হাজার ৬০৩। এর মধ্যে মারা গেছে ৩৩ হাজার ৪৮৯ জন। তবে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৯ জন। অপরদিকে রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লাখ ৯২ হাজার ৬০৮ এবং মারা গেছে ৪০ হাজার ৭৬৯ জন।