ঢাকা: মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় শিল্প ও সেবাখাতের জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো আরও ১৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ মূলধণ ঋণ বিতরণ করবে।
প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আগামী তিন বছরে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ ঋণ বিতরণ করা হবে।
১৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে চলতি অর্থ বছরেই বিতরণ করা হবে ৪ হাজার ৬০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থ বছরে বিতরণ করা হবে ৫ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বিতরণ করা হবে ৬ হাজার ১০ কোটি টাকা।
সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর পত্রে এই ঋণ বিতরণের কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ মূলধন সহায়তা বাবদ এই অর্থ তিন বছরে বিতরণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ব্যাংকগুলো যখন সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা করছে, তখন ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন যে এই সুবিধাগুলো প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছাবে কি না।
সুতরাং ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণ নীতি আরও সহজ, প্রচলিত নীতির বাইরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে ঋণ গ্রহণকারীদের তালিকায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন নীতি নির্ধারকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, “তিন বছর মেয়াদী ঋণের প্যাকেজ খুবই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু তার আগে আমাদের ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন করা দরকার। না হলে প্রচলিত উপায়ে এই প্যাকেজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ”
তিনি আরও বলেন, “প্যাকেজের সাফল্য নির্ভর করে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা, তহবিল পর্যাপ্ততা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার ওপর। এজন্য আমাদের প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পরিচালকদের অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হতে হবে। তাহলেই প্যাকেজ বাস্তবায়ন সম্ভব। ”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ মূলধন প্যাকেজের ঋণের সুদহার অন্যান্য ঋণের সুদের চেয়ে কম হবে।
এই কর্মসূচির আওতায় সোনালী ব্যাংক তিন বছরে (২০২০-২০২২) ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা বিতরণ করবে। জনতা ব্যাংক বিতরণ করবে ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ৩ হাজার কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক ৩ হাজার ৩শ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংক ২৯৪ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) বিতরণ করবে ৫০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারাস অ্যান্ড ইমপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “বর্তমান প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় দেওয়া ঋণ কিছু নীতিগত সমস্যার কারণে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছায়নি। ”
তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রায় নীতিমালা পরিবর্তন না হলে সত্যিকার অর্থে কোনো উপকার হবে না। শিল্প ও সেবাখাতের ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ঋণ পৌঁছাতে হলে নীতিমালা আরও সহজ করতে হবে। ”