রাজধানীতে ৩ জনের আত্মহত্যা

রাজধানীতে ৩ জনের আত্মহত্যা

ঢাকা: রাজধানীর পৃথক এলাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে তিনজন আত্মহত্যা করেছেন। মৃত তিনজন হলো-মতিঝিল এলাকার বিল্লাল হোসেন (৪০), সবুজবাগ এলাকার সোনিয়া আক্তার সুমি (১৯) ও আহির বিশ্বাস (১৫)। সোমবার (২ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে অচেতন অবস্থায় আহিরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত আহিরের মামা তাপস কান্তি বল  জানান, তাদের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শষিকর গ্রামে। আহিরের বাবা ডা. রঞ্জিত বিশ্বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় বেসরকারি একটি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক। তিনি সেখানেই থাকেন। মা সংগীত শিল্পী রমা বাড়ই মেয়ে আহির ও এক ছেলেকে নিয়ে মগবাজার গাবতলা এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকে। তিনি আরও জানান, আহির স্থানীয় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ভারতশ্বরী হোমস্ স্কুলের ১০ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করতো। সকালে আহিরের মায়ের কাছে সংবাদ পান যে, আহির দরজা খুলছে না। পরে মগবাজারের বাসায় গিয়ে দেখেন আহির ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে রেখেছে। পরে দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান আহিরকে। পরে সেখান থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আহিরের আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আহিরের স্কুল বন্ধ। বাসায় ঠিকমতো পড়াশোনা করতো না সে। এ নিয়ে রোববার (২ নভেম্বর) রাতে ওর মা তাকে বকাঝকা করে। এই কারণেই আত্মহত্যা করতে পারে সে। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ (পরিদশর্ক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে  জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। এদিকে মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, কুমিল্লার চান্দিনার আব্দুল খালেকের ছেলে বিল্লাল হোসেন। এক মেয়ে ও স্ত্রী পরিবার নিয়ে মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনির জি ১২/১/২ নম্বর বাসার নিচতলায় ভাড়া থাকতেন। ফকিরাপুল এলাকার একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন তিনি। রোববার রাতে বিল্লাহ বাসায় সবার অগোচরে রুমের দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।

এসআই জানান, কী কারণে ওই ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়েছেন তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। বিস্তারিত জানার জন্য তদন্ত চলছে। মৃত বিল্লালে ছোট ভাই মো. শাহ জালাল জানান, ফকিরাপুলের সেলিমের ওয়ার্কশপে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে তিনি। লকডাউনের পর থেকে তিনি নিয়মিত বেতন পেতো না। এজন্যই টেনশনে থাকতো। আমাদের ধারণা টেনশন থেকেই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। অপরদিকে সবুজবাগ থানার এসআই মো. আনোয়ার হোসেন জানান, সোনিয়া আক্তার সুমির স্বামী শামীম সরদারকে নিয়ে সবুজবাগের কদমতলা আট নম্বর লেনে একটি বাসার ভাড়া থাকতো। সুমির বাবার বাড়ি বাগেরহাট জেলায়। গত চার মাস আগে শামীম এবং সুমির বাবার পছন্দের মতে তাদের বিয়ে হয়। শামীম কিছুটা এবনরমাল ছিলেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ক্যামেরাম্যানের কাজ করতেন তিনি আর সুমি গৃহিণী। সুমির স্বামী শামীমকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না। সবসময় স্বামীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতো। এই নিয়ে তার বাবা রোববার এসে তার সঙ্গে একটু রাগারাগি করেন। পরে তিনি অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে চলে যায়। রাতে রুমের দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় তিনি। এসআই আরও জানান, খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে ওই বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বাবার সঙ্গে মনোমালিন্যর কারণেই তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন