দ্বীন ইসলামের ভাই-ভাবি-ভাতিজাকে হত্যার দায় স্বীকার

দ্বীন ইসলামের ভাই-ভাবি-ভাতিজাকে হত্যার দায় স্বীকার

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের লাশের ময়নাতদন্ত শুক্রবার বেলা দুইটায় কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়। পরে লাশ আত্মীয়স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এদিকে বড়ভাই-ভাবি ও ভাতিজাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম।

এর আগে মর্গে টিয়াদী উপজেলার জামসাইট দক্ষিণপাড়া গ্রামের আসাদুজ্জামান (৫০), তার স্ত্রী পরভীন আক্তার (৪০) ও তাদের পুত্র লিয়নের (১২) লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন কটিয়াদী থনার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম।

সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, প্রত্যেকের কপালে, মাথায় ও মাথার পেছনে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাদের লাশ শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বাড়ির পেছনে ঝোঁপ-ঝাড়ে ঘেরা নির্জন স্থানে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়। গর্ত থেকে মাটি সরিয়ে প্রথমে টেনে বের করা হয় লিয়নের মরদেহ, এরপর পারভীন আক্তার এবং সবশেষে আসাদুজ্জামানের মরদেহ। লাশগুলো একটির ওপর আরেকটি রেখে মাটি চাপা দেয়া হয়েছিল। পুলিশের ধারণা, তাদেরকে প্রথমে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করা হয় এবং পরে মাটি চাপা দেয়া হয়। এই ঘটনায় আটক চারজনকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

পুলিশ ও আত্মীয় স্বজন সূত্রে জানা যায়, আসাদুজ্জামান স্থানীয় বাজারে মুদির দোকানদারি করতেন। তার বড় ছেলে তোফাজ্জল হোসেন ঢাকায় এবং দুই ছেলে মোফাজ্জল ও লিয়ন তার সঙ্গেই থাকতো। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মোফাজ্জল তার নানার বাড়ি থেকে বাড়িতে ফিরে ঘরের দরজা খোলা দেখতে পায়, কিন্তু বাবা-মা ও তার ছোট ভাইকে খুঁজে পায় না। দাদিকে জিজ্ঞাসা করলে দাদি চুপ করে থাকে। পরে সে ঘরে রক্তের দাগ দেখতে পায়। সে প্রতিবেশীকে ঘটনাটি জানায় এবং সারাদিন খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সন্ধ্যার পর লোকজন নিয়ে সে থানায় এসে ঘটনাটি জানায়। থানা থেকে ম্যাসেজ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গচিহাটা তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মোজাম্মেল ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং ঘরের পেছনে গিয়ে নতুন খোঁড়া কবরের মতো জায়গা দেখতে পান। সেটা গাছের ডালপালা দিয়ে ঢাকা ছিল। খবর পেয়ে পরে থানা থেকেও পুলিশ আসে। পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে একে একে গর্ত থেকে লাশগুলো টেনে তোলা হয়। আগের রাতে তাদেরকে হত্যা করে লাশগুলো মাটিচাপা দেয়া হয় বলে পুলিশের ধারণা।

কটিয়াদী থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, জমি-জমা নিয়ে বিরোধ ও পারিবারিক কলহের কারণে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হতে পারে। রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ভাই দীন ইসলাম, মা সেওয়া বেগম, বোন নাজমা বেগম ও ভাগ্নে আল আমিনকে থানায় আনা হয়েছে।

ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম জানান, দীন ইসলামের দেয়া তথ্যমতে একটি শাবল ও একটি কোদাল জব্দ করা হয়েছে। বড়ভাই-ভাবি ও ভাতিজাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম। আটককৃতদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। শুক্রবার বিকালে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা দায়ের হয়নি।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন