মেহেরপুর শহরের তাঁতীপাড়ায় শহর সমাজ সেবা অফিসের মাঠকর্মী ফারুক হোসেনকে (৩৯) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে শহরের তাঁতীপাড়ায় এবং সদর থানার সন্নিকটে এ ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ফারুক হোসেন তাঁতীপাড়ার মৃত ফজিলা খাতুনের ছেলে। তার বাবা সাখাওয়াত বহুআগে থেকে অন্যত্র থাকেন। নিহতের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে নাহিদ (১২) এবং ছোট ছেলে নবাব (৪)।
তিনি ২০০৮ সালে মেহেরপুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের রাধুনি হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। পরে বিভাগীয় পরীক্ষা দিয়ে মাঠ কর্মী হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। এর আগের বার মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করেন। মাত্র কয়েক ভোটর ব্যবধানে পরাজিত হোন।
স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুর সদর থানা মোড়ের একটি দোকান থেকে কয়েল কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির ঠিক ২০ গজ পূর্বে কয়েকজন সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে পেছন দিক থেকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তার ঘাড়, পিঠ ও পায়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাবিবুর রহমান জানান, হাসপাতালে পৌছানোর আগেই তিনি মারা গেছেন। তার শরীরের ঘাড়ে, পিঠে এবং পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। যাতে গভীর ক্ষত হয়েছে এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খান জানান, নিহতের বাড়ির ঠিক ২০ গজ দূরে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালিয়েছে। সুরতহাল রিপোর্টে পিঠে, ঘাড়ে এবং পায়ে কোপানোর চিহৃ রয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ হত্যার কোন ক্লু পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো জানান, ঘটনা জানতে পেরেই পুলিশ সুপার মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের একাধিক দল ইতিমধ্যে অভিযানে নেমেছে। লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নিহত ফারুক হোসেনের বড় মামা আলাউদ্দিন জানান, তাকে মেরে ফেলার মত কোন বিরোধ কারোর সাথে ছিল বলে আমাদের জানা নেই।
মেহেরপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তাঁতীপাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ আবু আবদুল্লাহ বাপ্পি জানান, খবর পেয়ে ছুটে হাসপাতালে গিয়ে দেখি মারা গেছে। ফারুকের কোন শত্রু থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে না।
পরে পুলিশসুপার এসএম মুরাদ আলী হাসপাতালে পরিদর্শন করে লাশের স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের প্রাথমিক ব্রিফ দেন। এসময় তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে হত্যার তেমন কোন কারণ এখনো বোঝা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে বোঝা যাবে।