ডেমরার তিতাস গ্যাস কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তা ৯ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ৫ বছরের করাদণ্ডে দণ্ডিত হলেন। তাদের কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ডেমরার তিতাস গ্যাস অফিসের উপসহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সরকার ও টেকনিশিয়ান মো. আব্দুর রহিম।
দুই আসামিই জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় কামরুজ্জামান সরকার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর সাজা পরোয়ানা করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে, আব্দুর রহিম অসুস্থ থাকায় রায় ঘোষণা পেছানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী। আদালত তা নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
জানা যায়, রাজধানীর দক্ষিণখানে অবস্থিত নিপ্পন সোয়েটার্সের মালিক ডিএম আসাদুজ্জামান আওলাদ তার প্রতিষ্ঠানের গ্যাস মিটার সংযোগের জন্য আবেদন করেন। এ দুই আসামি তার কাছে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং জানান টাকা না দিলে মিটার সংযোগ দেওয়া হবে না। গ্যাস বন্ধ থাকায় ব্যবসার ক্ষতির কথা বিবেচনা করে তিনি নিরুপায় হয়ে টাকা দিতে রাজি হন।
২০০৭ সালের ১০ জুন বিকেল ৪টার দিকে কামরুজ্জামান দুই হাজার টাকা এবং ১৩ জুন বিকেল পৌনে ৪টার দিকে আব্দুর রহিম সাত হাজার টাকা প্রতিষ্ঠানের সহকারী হিসাব রক্ষক মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে নিয়ে যায়। বাকি টাকা মিটার সংযোগের দিন দেওয়ার জন্য আসামিরা চাপ সৃষ্টি করলে তিনি তা দিতে রাজি হন। আসামিরা জানায়, ১৪ জুন মিটার সংযোগ দেওয়া হবে।
আসাদুজ্জামান আওলাদ বিষয়টি র্যাব-১ কার্যালয়ে জানায়। বিকেল তিনটার দিকে আসামিরা মিটার সংযোগ দিতে এলে র্যাব সদস্যরা সাদাপোশাকে আশেপাশে অবস্থান নেয়। কাজ শেষে বাকি ৬ হাজার টাকা দাবি করলে আওলাদ তার ম্যানেজার মকবুলের কাছে যেতে বলেন। টাকা নেওয়ার সময় র্যাব তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
এ ঘটনায় ডিএম আসাদুজ্জামান আওলাদ ২০০৭ সালের ১৫ জুন মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক জাহিদ হোসেন দু’জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ৮ সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্য দেন।