পারিবারিক কলোহের জের ধরে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দ্বিতীয় স্ত্রী জোসনা বেগমকে (৩৫) হত্যার পর চার টুকরো করে লাশ বস্তায় ভরেন তাফালবাড়ী ক্যাম্পে কর্মরত এক পুলিশ কনস্টেবল। এছাড়া পেট কেটে গর্ভের ভ্রুণ পলিথিনে প্যাকেট করে গুম করতে গিয়ে আটক হয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ভোরে শরণখোলা উপজেলার তাফালবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। স্ত্রী হত্যাকারী পুলিশ কনষ্টেবল মো. সাদ্দাম হোসেনকে ওই দিন মধ্যরাতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, জোসনা বেগমের কাছেই থাকতো তার প্রথম পক্ষের এক মাত্র ছেলে সন্তান জিসান ( ১০)। তাফালবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন ভাড়া বাসায় শিশু জিসান প্রতিবেশী একটি শিশুর সাথে বুধবার বিকালে হাতাহাতি করে। ওই শিশুটি পুলিশ কনষ্টেবল সাদ্দামকে বিষয়টি জানালে সে জিসানকে কান ধরে ওঠবস করায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে স্ত্রী জোসনা স্বামীকে গালাগাল করতে থাকে। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ চরমে উঠলে বৃহস্পতিবার ভোরে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জোসনাকে ভাড়া বাসায় প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সাদ্দাম। পরে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। কাটা হয় দুই হাতের কবজি। পেট কেটে গর্ভের ছয় মাসের ভ্রুণ বের করে পলিথিনে প্যাকেট করা হয়। এর পর স্ত্রী চার টুকরো লাশ এবং ভ্রুণ বস্তাবন্দী করে রেখে দেয়া হয় ঘরে। লাশ গুম করার জন্য পাশের বলেশ্বর নদী বা মাটিতে পুতে ফেলার অপেক্ষায় ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম। কিন্তু সেই সুযোগের আগেই ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। কাজের বুয়া বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ওই বাসায় গিয়ে দেখতে পান পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম একটি বস্তায় টুকরো-টুকরো লাশ ভরছে। এসময়ে সাদ্দাম তাকে অর্থের প্রলোভন দিয়ে কাইকে বিষয়টি না জানাতে বলে। কাজের বুয়া ওই বাসা থেকে বের হয়ে বিষয়টি স্থানীয় লোকজনদের জানায়। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি শরণখোলা থানা পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে শরণখোলা থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কনস্টেবলের বাসা থেকে ভ্রুণসহ বস্তাবন্দী জোসনার চার টুকরো লাশ উদ্ধার করে। এসময় গ্রেফতার করা হয় তাফালবাড়ী ফাঁড়ির কনস্টেবল ঘাতক সাদ্দাম হোসেনকে (৩০)।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক সাদ্দাম হত্যাকাণ্ডের এসব তথ্য জানিয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের পর আরো বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে বলেও জানান ওসি।