ঢাকা: দীর্ঘদিন যাবৎ ১৬ বছরের মেয়েকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে শরীফুর ইসলাস নামে এক ‘সাধক’ বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এলআইসি ইউনিটের একটি টিম।
কথিত এ সাধক তার কিশোরী মেয়েকে নাটোরের বড়াই গ্রামে নিজ বাড়িতে আটকে গত ২ মাস ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বুধবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) রাতে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানার বসন্তপুর বাগডাংগীর পদ্মার চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডির এলআইসি ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধরের নের্তৃত্বে টানা ২৫ ঘণ্টা অভিযানের পর কথিত এ সাধক বাবাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।
শরীফুল মূলত ভণ্ড প্রকৃতির মানুষ। সন্ন্যাসীর বেশ ধারন করে ভবঘুরে জীবন-যাপন করতো। এ কারণে গত দুই বছর আগে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। এরপর থেকে তার মেয়ে নাটোর দীঘাপাতিয়া পূর্ব হাগুরিয়া গ্রামে নানার বাড়িতে চলে যায়। গত ঈদুল আজহার ৬ দিন আগে শরীফুল বিভিন্ন কৌশলে মেয়েকে নাটোর বড়াইগ্রামে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকেই তিনি মেয়েকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান। একপর্যায়ে মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর বিষয়টি অন্য কাউকে না বলার জন্যও চাপ সৃষ্টি করেন। ঘটনা চলাকালে বাড়িতে কেউ এলে শরীফুল তার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিতেন না।
একপর্যায়ে মেয়েটি তার নানী ও মায়ের সঙ্গে যােগাযােগ করে বিষয়টি জানায়। এরপর তারা মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (নম্বর-২৩) দায়ের করেন। এরপর থেকেই শরীফুল পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শরীফুল মেয়েকে নিয়মিত ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ২০১৫ সালে ২৪ আগস্ট শরীফুলের বিরুদ্ধে মাদক আইনে আরও একটি মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
শরীফুলকে নাটোর জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।