স্ত্রী তৃষা কর্মকারকে হত্যার ঘটনায় আটক করা হয়েছে স্বামী সুমন কর্মকার ওরফে বাপ্পিকে। জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এমনকি আদালতেও জবানবন্দী দিয়েছেন। বাপ্পির অভ্যাস মদপানের, আর স্ত্রী তৃষা ছিলেন ফেসবুক আসক্ত। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্ত্রীকে হত্যা করেন বাপ্পি।
মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরেই বাপ্পি স্ত্রীর মরদেহ নিয়ে যান হাসপাতালে। সেখান থেকে পালানোর চেষ্টার পর ধরা পড়েন পুলিশের হাতে। তদন্তে নেমে এসব তথ্য পেয়েছে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আল মামুন বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আলামত আর ওই ঘরের বাসিন্দাদের বর্ণনার ভিন্নতা দেখে সন্দেহ হয়। বেশ কিছু প্রশ্নের সঠিক উত্তর না মেলায় স্বামী সুমন কর্মকার ওরফে বাপ্পিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
বাপ্পির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, স্বরূপকাঠি উপজেলার নেছারাবাদ থানার দইহাটি গ্রামের তৃষার সঙ্গে দুই বছর আগে বিয়ে হয় বরিশাল নগরের হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ কর্মকারের ছেলে বাপ্পির। বিয়ের পর তৃষা জানতে পারেন তার স্বামী মাদকাসক্ত। এ নিয়ে এর আগেও ঝামেলা হয়েছে। অপরদিকে তৃষা ফেসবুকে চ্যাটিং করতো। স্ত্রীর এই আসক্তি মানতে পারেনি বাপ্পি। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝামেলা হতো। তবে তা খুব বেশি পর্যায়ে নয়। হত্যাকাণ্ডের দিন অর্থাৎ ২ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘরে ফেরেন বাপ্পি। স্ত্রীর কাছে ভাত চাইলে, তিনি ভাত দিয়ে স্বামীকে খাবার ঘরে রেখে শোয়ার ঘরে গিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করছিলেন। খাবার শেষে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলেন বাপ্পি। তখন তৃষা স্বামীর মদ খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে পুনরায় কথা বলেন। এতে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। বাপ্পি তার স্ত্রীকে গালিগালাজ করেন। এসময় রাগে তৃষা ঘরে থাকা ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কেটে বিছানায় বসে কান্না করতে থাকে। এমন সময় ওড়না পেঁচিয়ে তৃষাকে হত্যা করে বাপ্পী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তৃষার মরদেহ গাড়িতে করে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান বাপ্পী।
এসআই ফিরোজ আল মামুন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করেছে তৃষার ভাই সাগর কর্মকার। আর শনিবার আটক বাপ্পি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।