যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে। সংস্থাটি জানায়, ভারত সরকার দেশটিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করায় কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিবিসি এ তথ্য জানায়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করে বলেছে, ভারত সরকারের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পেছনে লেগেছে।
এক বিবৃতিতে জারি করে সংস্থাটি জানায়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভারতের সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিয়েছে সরকার। ফলে বাধ্য হয়ে সংস্থার সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভারতের সব কর্মীকেও আপাতত কর্মচ্যুত করতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাটি। সব প্রচার ও গবেষণার কাজও বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে তারা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিসার্চ, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড পলিসি বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর রজত খোসলা বিবিসিকে বলেন, ‘ভারতে আমরা অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে সম্মুখীন হয়েছি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়া নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সরকারের আগ্রাসন, আক্রমণ এবং হয়রানির মুখে পড়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলাম এবং ভারতে সরকারের কাছে যে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলাম তার উত্তর তারা দিতে চাচ্ছে না। দিল্লির দাঙ্গার বিষয়ে বা জম্মু ও কাশ্মীরে বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘনের ঘটনায় আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনের উত্তর না দিয়ে অন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত সরকার। ’
গত মাসে এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে দাঙ্গার সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে পুলিশ।
এর প্রতিবাদে দিল্লি পুলিশ বলে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন ‘পক্ষপাতদুষ্ট এবং বিদ্বেষপূর্ণ’।
এর আগে আগস্টের শুরুতে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের এক বছর উপলক্ষে ওই অঞ্চলে আটক সব রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীকে মুক্ত করা এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা ফের চালু করার আহ্বান জানায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
অন্যদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে বলে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতের ফরেইন কন্ট্রিবিউশন অ্যাক্টের আওতায় কখনো নিবন্ধন নেয়নি, তাই সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ভারতে কোনো এনজিওর বিদেশি তহবিল নিতে গেলে ওই আইনে নিবন্ধন করতে হয়।
তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক সব নিয়ম মেনেই তারা সেখানে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।