বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতে ১৩০ কোটি মানুষের বাস। দেশটিতে রয়েছে শতাধিক ভাষা।
এমন একটি দেশ জাতিসংঘের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে না থাকায় ক্ষোভ ঝাড়লেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রশ্ন রাখলেন, আর কত দিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে? আর কত দিন জাতিসংঘে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ার বাইরে থাকবে ভারত?
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে এ প্রশ্ন তোলেন নরেন্দ্র মোদী।
চীনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের মধ্যে মোদীর এমন প্রশ্ন নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার দাবিকে আরও জোরালো করবে বলে ধারণা।
বক্তব্যে তিনি জাতিসংঘের সংস্কার চেয়ে বলেন, ১৯৪৫ সালের তুলনায় বিশ্ব অনেক বদলে গেছে। সে সময়ের তুলনায় এখনকার সমস্যা ও সমাধান পুরোপুরি ভিন্ন। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎও ভিন্ন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন একটি প্রশ্নের মুখোমুখি। আর তা হলো, ১৯৪৫ সালের জাতিসংঘ কি এখনো প্রাসঙ্গিক?
‘জাতিসংঘে সংস্কার প্রয়োজন এবং ভারত সেই সংস্কারের দিকে তাকিয়ে আছে। ’
জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আমরা যখন দুর্বল ছিলাম, তখন গোটা বিশ্বের জন্য সমস্যা তৈরি করিনি। যখন শক্তিশালী হয়েছি, তখনও আমরা গোটা বিশ্বের কাছে বোঝা হয়ে উঠিনি। ভারত জাতিসংঘের শান্তি মিশনে সেনা পাঠিয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি সেনা হারিয়েছে।
‘জাতিসংঘ এবং ভারতের মূল আদর্শ এক সুরে বাঁধা। বসুধৈব কুটুম্বকম (গোটা বিশ্বই আত্মীয়) এই মন্ত্র জাতিসংঘের সভায় বার বার উচ্চারিত হয়েছে। ভারতও সর্বদা গোটা বিশ্বের কল্যাণের কথাই ভেবেছে। ’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাস মহামারির মোকাবিলা নিয়ে বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে বিশ্বকে আট–নয় মাস ধরে লড়তে হচ্ছে। এই যুদ্ধে জাতিসংঘ কোথায়? সংস্থাটির কার্যকর কোনো সাড়াও মিলছে না।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদই হলো সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন। বর্তমানে এ পরিষদের স্থায়ী সদস্য হলো- যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং চীন। এই দেশগুলোর প্রতিটিরই ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। ভারত অবশ্য এই পরিষদে সাত দফায় অস্থায়ী সদস্য হিসেবে ছিল। সর্বশেষ গত জুনে দেশটি আবারও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়। এই মেয়াদের শুরু হবে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে।