ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: পুলিশ খোঁজ না পেলেও ফেসবুকে সরব আসামিরা

ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: পুলিশ খোঁজ না পেলেও ফেসবুকে সরব আসামিরা

ঘটনার রাত সাড়ে ১০টায় স্বামীসহ ওই নারীকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার নারীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার সংবাদ প্রচারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের ছবি ভাইরাল হয়। স্বামীর সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় চলছে দেশজুড়ে। আসামিদের ধরতে গিয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ আসামিদের হদিস করতে না পারলেও অভিযুক্তরা ফেসবুকে সরব রয়েছেন।

শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এই মামলার দুই আসামিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে দেখা গেছে। স্ট্যাটাসে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।

গণধর্ষণ মামলার ৫ নম্বর আসামি রবিউল ইসলাম শনিবার সকাল ১১টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দেন। তিনি লেখেন— ‘সম্মানিত সচেতন নাগরিকবৃন্দ, আমি রবিউল হাসান। আমি এম সি কলেজের একজন শিক্ষার্থী। আপনারা অনেকেই চেনেন, আমি কেমন মানুষ তা হয়তো অনেকেই জানেন। গতকাল এম সি ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের সাথে, কে বা কারা আমাকে জড়িয়ে অনেক অনলাইনে নিউজ করিয়েছেন, আমি এম সি কলেজ ছাত্র, কিন্তু আই হোস্টেলে কখনোই ছিলাম না, আমি বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ করছি, আমি এই নির্মম গণধর্ষণের সাথে জড়িত নই, আমাদের পরিবার আছে। যদি আমি এই জঘন্যকাজের সাথে জড়িত থাকি তা হলে প্রকাশে আমাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। আমি কোনোভাবেই এই কাজের সাথে জড়িত নই। সবার কাছে বিনীত অনুরোধ করছি সত্য না জেনে আমাকে এবং আমার প্রাণের সংঘটন ছাত্রলীগের নাম কোনো অপপ্রচার করবেন না।

এমসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণকারী সকল নরপশুদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ’

এরআগে এই মামলার ৬ নম্বর আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুম ফেসবুকে লেখেন— ‘এরকম জঘন্য কাজের সাথে আমি জড়িত না। যদি জড়িত প্রমাণ পান প্রকাশ্যে আমাকে মেরে ফেলবেন। একমাত্র আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে। আল্লাহ আমাকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন। তবে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে আমাকে সুইসাইডের দিকে নিয়ে যাওয়া আপনাদের বিচার আল্লাহ করবেন। ’

ফেসবুকে সরব থাকার পরও আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আমরা আসামিদের গ্রেফতারে সবধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি। পৃথক স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, ফেসবুক ওয়ালে আসামিদের স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়টি নজরে ছিল না। এ বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে শেয়ার করব।

শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে ছাত্রলীগের ৬ জন নেতাকর্মী গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই দম্পতিকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় শনিবার ভোরে ৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে অভিযুক্ত করে নগরের শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন ধর্ষিতার স্বামী। এছাড়া অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন শাহপরান থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন সরকার। ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন তিনি।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন