সাভার (ঢাকা): এক সময় বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ পদ সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ছিলেন আমির হোসেন জয়।
পরে লেবাস পাল্টিয়ে যোগ দেন আওয়ামী লীগের যুব সংগঠন যুবলীগে।
এই জায়গায় থেকে প্রতিনিয়ত বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন এই দলের ক্ষমতাসীন পদ। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের দৌরাত্ম্যে ত্যাগী নেতারা হয়ে পড়ছেন কোনঠাসা।
বর্তমান বিএনপির নেতা ও অর্থ যোগানদাতা বড় ভাই মো. আমানুল্লাহর ছত্রছায়ায় ছাত্রদলেরও বড় পদের অধিকারী ছিলেন ছোট ভাই জয়। ইউনিয়নের এই হাইব্রিড নেতার শুধু যে দল কেলেঙ্কারির রয়েছে তা নয়, তার বিরুদ্ধে রয়েছে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগও।
এত কিছু জানা থাকলেও যুবলীগের আশুলিয়া থানা পর্যায়ের আহ্বায়ক কমিটি জয়কে কয়েক বছর আগে শিমুলিয়া ইউনিয়নের আহ্বায়ক করেছেন। শেষমেষ ইউনিয়নের যুবলীগের চূড়ান্ত কমিটির সভাপতির জন্যও পার্থী হয়েছেন তিনি। এনিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
অভিযোগ উঠেছে, ২০০৩ ও ২০০৭ সালে বিএনপির আমলে সাভার উপজেলা শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদলের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন আমির হোসেন জয়। সেই সঙ্গে জয়কে বিএনপির বিভিন্ন নেতা-নেত্রীর সঙ্গে নানা প্রোগ্রামসহ ঈদ পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানেও দেখা গেছে। আর তার বড় ভাই আমানুল্লাহ বর্তমানেও বিএনপির নেতা ও অর্থ যোগানদাতা।
অভিযোগ রয়েছে, জয়ের ছত্রছায়ায় যুবদল কর্মী ও হত্যা মামলার আসামি সাব্বির আহমেদ ইউনিয়ন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, জয়ের মূলত নাম আমির হোসেন। এলাকায় তাকে সবাই মুরগি আমির বলেই চিনেন। ছাত্রদল থেকে যুবলীগের আসার পর পরই নামের সঙ্গে জয় সংযোজন করে হয়ে যান আমির হোসেন জয়।
বিষয়টি নিয়ে আমির হোসেন জয়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির বর্তমানের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বলেন, আমাদের কমিটিতে আমির হোসেন জয়ের ভাই আমানুল্লাহ ৩৯ নম্বর সদস্য হিসেবে আছেন এবং তিনি বিভিন্ন সময় নানা প্রোগ্রামের অর্থ যোগানও দিয়ে থাকেন। আমির হোসেন শুধু দল পরিবর্তন করেছেন এমনটিই নয়, দলের সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজের নামেও পরিবর্তন এনেছেন। আমির হোসেন থেকে হয়েছেন আমির হোসেন জয়।
এ বিষয়ে সে আমলের শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ২০১১ সালের শিমুলিয়া ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি দায়িত্বে থাকা সময়ে জয়ের ভাই আমানুল্লাহ বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচিতে অর্থ যোগান দিতেন এবং তার ভাই আমির হোসেন জয় বিভিন্ন কর্মসূচিত উপস্থিত ছিলেন।
আমির হোসেন জয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তৎকালীন সময়ে ছাত্রদলের শিমুলিয়া ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ওসমান গণি।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। এর জন্য কমিটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে জয় কখনো বিএনপির নেতা ছিলেন না। আর তার (জয়) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা যথাযথ নয়।
বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে নেতাদের সঙ্গে ছবির বিষয়ে তিনি বলেন, জয় এই ছবিগুলো বিয়ে বা কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠানে তুলে থাকতে পারেন।
ঢাকা জেলা যুবলীগে সাধারণ সম্পাদক জিএস মিজানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান।