ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূরর বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়েছে। তবে এ মামলার বাদীও একই তরুণী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির একজন ছাত্রী।
সোমবার রাতে ঢাকার কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এ মামলায় নূরসহ ছাত্র অধিকার পরিষদের মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে লালবাগ থানায় ওই ছয়জনের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে মামলা করেন এ তরুণী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, লালবাগ থানায় যে শিক্ষার্থী মামলা করেছিলেন, তিনিই কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেছেন। তবে ঘটনা দুটি ভিন্ন।
তিনি বলেন, কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ, ধর্ষণে সহযোগিতা এবং পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চরিত্র হননের অভিযোগ আনা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগকে (২৮) এ মামলার ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে করা হয়েছে মামলার ২ নম্বর আসামি, যাকে লালবাগের মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে।
আর লালবাগের মতো কোতোয়ালির মামলাতেও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের নাম এসেছে আসামির তালিকার ৩ নম্বরে। বাকি তিন আসামি হলেন- পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম (২৮), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি নাজমুল হুদা (২৫) এবং কর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল্লাহ হিল বাকি (২৩)।
বাদীর ভাষ্য, একই বিভাগে পড়া এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কাজে থাকার কারণে হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। এর সুযোগ নিয়ে মামুন চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি তার লালবাগের বাসায় নিয়ে তাকে ‘ধর্ষণ’ করেন। এ অভিযোগেই তিনি লালবাগ থানায় মামলাটি করেন।
আর কোতোয়ালি থানার মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ধর্ষণের ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে আসামি সোহাগ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। সুস্থ হওয়ার পর মামুনকে বিয়ের জন্য চাপ দেন ওই তরুণী। তখন সোহাগ তাকে ‘সহযোগিতার আশ্বাস’ দেন এবং মামুনের সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে সদরঘাট হয়ে ‘লঞ্চে করে চাঁদপুরে’ নিয়ে যান। কিন্তু চাঁদপুরে মামুনকে না পেয়ে ওই ছাত্রীর সন্দেহ হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে লঞ্চে সোহাগ তাকে ‘ধর্ষণ করেন’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
এজাহারে বলা হয়, এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই তরুণী ডাকসু ভিপি নূরের সঙ্গে দেখা করেন। নূর তাকে প্রথমে ‘মীমাংসা’ করে দেয়ার আশ্বাস দিলেও পরে ‘বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে অপপ্রচার চালিয়ে সম্মানহানি করার’ হুমকি দেন।
এরই মধ্যে মামলার বাকি তিন আসামি নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ‘কুৎসা’ রটাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।