অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আব্দুল মালেককে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
অবৈধ অস্ত্র ও জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় করা পৃথক দুই মামলায় সোমবার এই রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
আব্দুল মালেককে আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তা তুরাগ থানার এসআই রুবেল শেখ ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম।
সোমবার রাজধানীর তুরাগ থানায় আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে মামলা দুটি দায়ের করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এর আগে রবিবার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর তুরাগ থানাধীন কামারপাড়া বামনের টেক ৪২ নম্বর হাজি কমপ্লেক্স ভবন থেকে আব্দুল মালেককে গ্রেফতার করে র্যাব-১।
গ্রেফতারের সময় আব্দুল মালেকের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল টাকা, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, আব্দুল মালেক (৬৩) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিবহন পুলের একজন চালক। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা, জাল নোট ব্যবসাসহ অস্ত্রের মাধ্যমে ভীতি প্রদর্শনপূর্বক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে আব্দুল মালেক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানিয়েছেন।
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও আব্দুল মালেকের ঢাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি, ফ্ল্যাট ও গাড়ি রয়েছে। নামে-বেনামে ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারী হলেও মালেক ছিলেন প্রভাবশালী। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, তুরাগ এলাকায় আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে জাল টাকাসহ, চাঁদাবাজি, বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরে র্যাব তদন্ত করে জানতে পারে, আব্দুল মালেক তুরাগ থানার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে পারেনি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা এবং জাল টাকার ব্যবসা করে আসছেন। আর এসব করেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, তুরাগ থানা এলাকার দক্ষিণ কামাড়পাড়ায় দুটি সাততলা বিলাসবহুল ভবন, ধানমন্ডির হাতিরপুল এলাকায় সাড়ে চার কাঠা জমিতে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন রয়েছে আব্দুল মালেকের। এছাড়া দক্ষিণ কামাড়পাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম গড়ে তুলেছেন।