ঢাকা: ব্যক্তিগত তহবিল থেকে টাকা দিয়ে বিক্রি করা সন্তানকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। আইনমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসন গাইবান্ধার ওই মায়ের কোলে সন্তান তুলে দিয়েছেন।
‘একজন মা গাইবান্ধার একটি ক্লিনিকে সন্তান জন্ম দিয়ে মেডিক্যাল বিল পরিশোধ করার জন্য ১৬ হাজার টাকায় তার সন্তানকে বিক্রি করেছেন। ’ এ নিয়ে শনিবার একটি ইংরেজি দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। এই সংবাদ আইনমন্ত্রীর নজরে আসে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম।
রেজাউল করিম জানান, বিষয়টি আইনমন্ত্রীর মনে দারুণভাবে পীড়া দেয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে তিনি গাইবান্ধার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দিয়ে নবজাতককে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
‘আইনমন্ত্রীর অনুরোধে শনিবারই গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন নবজাতকে জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলা থেকে উদ্ধার করে মা আঞ্জুলা বেগমের কোলে ফেরত দেয়। ’
এছাড়া ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করার জন্য যে টাকা নেওয়া হয়েছিল তা ফেরত দেওয়ার জন্য আইনমন্ত্রীর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসন বরাবর ১৬ হাজার টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল।
একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আঞ্জুলা বেগমকে ২০ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, একটি শাড়ি, একটি লুঙ্গি ও নগদ দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) আঞ্জুলা বেগমের বোনের ছেলে ছানারুল ইসলাম জানান, আঞ্জুলা বেগমের স্বামী শাহজাহান মিয়া ছোটবেলায় গাইবান্ধার সদর উপজেলার সোলাগাড়ী গ্রামে আসেন এবং সেখানেই বসবাস করতে থাকেন। এরপর একই গ্রামের আঞ্জুলা বেগমকে বিয়ে করেন। ইতোপূর্বে তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান হয়। তাদের নিজস্ব কোনো জমি ও বাড়ি নেই। শাহজাহান মিয়া অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। স্ত্রী ও সন্তানসহ পাঁচজনের পরিবারে খুব অভাব অনটন তার।
গাইবান্ধার যমুনা ক্লিনিকের মালিক ফরিদুল হক সোহেল জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ১২টার দিকে চতুর্থ সন্তান জন্মদানের জন্য আঞ্জুলা বেগম তার ক্লিনিকে ভর্তি হন এবং রাত একটার দিকে সিজারের মাধ্যমে তিনি একটি পুত্র সন্তান লাভ করেন। অনেক চেষ্টায় বিল পরিশোধ করে ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ক্লিনিক থেকে রিলিজ নেন আঞ্জুলা