অবশেষে সঙ্কটের অথৈ সাগরে আপাতত কূল পেলেন না কঙ্গনা রনৌত। রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর সোমবার সকালেই তিনি ঘোষণা দিলেন, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে মুম্বাই ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তিনি।
সোমবার সকালে এক টুইটার পোস্টে কঙ্গনা তার বর্তমান পরিস্থিতির উল্লেখ করে মুম্বাই ছাড়ার কথা জানান। বলিউডের ‘কুইন’খ্যাত অভিনেত্রী মুম্বাই ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে লেখেন, ‘অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে মুম্বাই ত্যাগ করছি। এ কয়েকদিন আমি ত্রাসের মধ্যে ছিলাম। আমাকে লক্ষ্য করে অনবরত আক্রমণ ও গালিগালাজ চলছেই। আমার কর্মস্থল ভেঙে ফেলার পর এবার আমার বাড়িও ভাঙার উদ্যোগ চলছে। সদাসতর্ক সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী ঘিরে রাখছে আমাকে। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর বলে আমি যে উপমা দিয়েছিলাম, এটা যেন তারই প্রতিধ্বনি। ’
শিবসেনার সঙ্গে কঙ্গনা রনৌতের বাকযুদ্ধ চলছেই। শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত কঙ্গনাকে হুমকি দিয়েছিলেন মুম্বাই না ফেরার। এরপর কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মুম্বাই ফেরেন কঙ্গনা। এরই মধ্যে তার কার্যালয়ের একাংশ ভেঙে দিয়েছে শিবসেনা নিয়ন্ত্রিত মুম্বাই পৌরসভা। এরপর মুম্বাইয়ের খারে অবস্থিত কঙ্গনার বাড়িও ভাঙার নোটিস দিয়েছে পৌরসভা। সামাজিকমাধ্যমে কঙ্গনার পক্ষে-বিপক্ষে নেটিজেনরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু শিবসেনা কেন কঙ্গনার ওপর ক্ষিপ্ত হলো।
ঘটনার সূত্রপাত সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুকে ঘিরে। শুরু থেকেই এ বিষয়ে সোচ্চার রয়েছেন বলিউড ‘কুইন’। তার দাবি, এটা আত্মহত্যা নয়, হত্যা। এরপর বলিউডে স্বজনপোষণ নিয়ে তোলপাড় হয়। বলিউড মাফিয়া নিয়েও মুখ খোলেন কঙ্গনা। সুশান্তের বান্ধবী রিয়ার সঙ্গে মাদকচক্রের যোগ প্রকাশিত হওয়ার পর ড্রাগ মাফিয়াদের নিয়েও কথা বলেন ‘মণিকর্ণিকা’। মাফিয়াচক্রের সঙ্গে বলিউডের বড় বড় তারকা থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল শিবসেনার সংশ্লিষ্টতা নিয়েও অভিযোগ তোলেন অভিনেত্রী। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয় শিবসেনা। শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত কঙ্গনাকে বাকযুদ্ধে আক্রমণ করেন। আর কঙ্গনা তো কখনই ছেড়ে দেওয়ার মানুষ নন। সঞ্জয়ের হুমকির মুখে মুম্বাইকে পাকিস্তান অধিকৃত কাম্মীরের সঙ্গে তুলনা করেন কঙ্গনা। এই বক্তব্যকে অস্ত্র বানিয়ে পাল্টা ঘায়েল করে শিবসেনা। জনমতও খানিকটা লাভ করে শিবসেনা।
এতটা যুদ্ধ কঙ্গনা রনৌত একাই করে যাচ্ছেন। তার কার্যালয় ভাঙার পরও বড় কোনো বলিউড তারকা তার পাশে দাঁড়ায়নি। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রোববারেই মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের সঙ্গে মতবিনিময় করেন কঙ্গনা। এরপর দিলেন মুম্বাই ছাড়ার ঘোষণা।