বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্যাডো এলাকা থেকে উধাও হওয়া এসব জোবাইকের ঠাঁই হয়েছে রাজধানীর বনানী, গুলশান ও বারিধারা এলাকায়। গত ২৪ জুন এসব জোবাইক নিয়ে সেখানে চালু করা হয় নতুন জোবাইক স্পট। এর আগে চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে হঠাৎ করে জোবাইক নিয়ে চলে যায় কর্তৃপক্ষ। পরে আর ওইসব ক্যাম্পাসে ফেরত যায়নি তারা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, আলোচনা ছাড়া এসব জোবাইক ক্যাম্পাস থেকে নিয়ে যাওয়া তাদের উচিত হয়নি। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকা অবস্থায় তাদের নিতে হলে তারা আলোচনা করে নিতে পারতো।
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডাকসু ও জোবাইক কর্তৃপক্ষের সহায়তায় জোবাইক সেবা কার্যক্রম চালু হয়। চালু হওয়ার পর নানা সঙ্কট লেগেই ছিল। চালু হওয়ার ৬ মাসেও সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জোবাইকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদি রেজা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সেখান থেকে জোবাইকগুলি নিয়ে এসেছি। আমরা সেগুলোর কাজ করছি। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির শেষে ক্যাম্পাস খুললে তখন আবার সাইকেল সরবরাহ শুরু করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছে, জাবি ও চবিতে জোবাইক সার্ভিস চালু করে হঠাৎ বন্ধ করে দেয়। এখানেও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া তারা এ কাজটি করেছে। এটা জবাবদিহিতার অভাব থেকে চালু হয়েছে।
ক্যাম্পাস শ্যাডোতে অবস্থানকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রাজধানীর গুলশান-বারিধারা-বনানী এলাকায় জোবাইকের সেবা কার্যক্রম চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো জোবাইক নিয়ে যাওয়া হয়।
বিষয়টি জানতে ডাকসুর সদ্য সাবেক ছাত্র পরিবহন সম্পাদক শামস-ঈ নোমান এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
জোবাইক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাঈনুল করিম বলেন, জোবাইক নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের তারা জানায়নি। এসব বিষয়ে তারা আমাদের সাথে কখনো যোগাযোগও করেনি। তাছাড়া শুরুতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জোবাইক থাকলেও পরবর্তীতে এসব জোবাইক কমতে শুরু করে।
চবি ও জাবিতে শুরু করেও নেই
জোবাইক সেবা প্রথম শুরু হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেবা শুরুর কিছুদিন পর জোবাইক ফেরত নিয়ে আসে জোবাইক কর্তৃপক্ষ। পরে ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ফেরত যাননি তারা। কাউকে না জানিয়ে হুটহাট ক্যাম্পাস ছেড়ে দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয় সেখানকার শিক্ষার্থীরা। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি, জোবাইকের একাউন্টে তাদের টাকা ছিল। যা ফেরত না দিয়েই চলে আসেন তারা। এ নিয়ে জোবাইক সেবা বিতর্কের সম্মুখীন হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এ দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান না করার বিষয়ে জোবাইকের কর্মকর্তা সেলিমুর রহমান জানান, ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় ও রাজনৈতিকভাবে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সহায়তা পাওয়া যায়নি। যার কারণে সেখান থেকে সেবা সরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ধরনের কিছু ঘটবে না বলে আশা করছি।