ঢাকা: রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সমন্বিত অভিযানে প্রায় ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা দামের মাদক অ্যামফিটামিন জব্দ করা হয়েছে। ইয়াবার চেয়ে শক্তিশালী এ মাদক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে হংকং হয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল।
তবে কোন দেশ থেকে এ বিপুল পরিমাণ মাদকগুলো এসেছে কিংবা কোন চক্র বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছিলো তা এখনো জানা যায়নি।
বুধবার (০৯ সেপ্টেম্বর) কুরিয়ার সার্ভিসে জিন্সের প্যান্ট রপ্তানির আড়ালে পাচার করার সময় এ বিপুল পরিমাণ অ্যামফিটামিনের চালানটি জব্দ করা হয়। এ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এ চালানের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আটক ছয়জন হলেন- বাংলাদেশ এক্সপ্রেস লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (অর্থ) খন্দকার ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ (৫০), সিনিয়র ম্যানেজার (অপারেশন) রাসেল মাহমুদ (৩২), ইউনাইটেড এক্সপ্রেসের জেনারেল ম্যানেজার গাজী শামসুল আলম (৪৩), ইক্সপোর্ট কার্গোর ভেতরে এমজিএইচ গ্রুপের লোডিং সুপারভাইজার কাজল থুটোকিশ গোমেজ, কার্গো হেলপার/লোডার মো. হামিদুল ইসলাম (৩০) ও মো. নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রপ্তানি কার্গো ভিলেজে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ৩৪০ কার্টন জিন্সের প্যান্ট চালানের মধ্যে ৭টি কার্টন থেকে অ্যামফিটামিন পাউডার উদ্ধার করা হয়। কার্টনে বিশেষভাবে লুকায়িত কার্বনের লেয়ার দ্বারা প্রস্তুত করা ২৮টি পাতলা এলুমিনিয়াম প্যাকেটে মোট ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম অ্যামফিটামিন পাউডার লুকানো ছিল।
জানা যায়, যে ৭টি কার্টনে এ্যামফিটামিন পাওয়া যায় সেগুলোর সাথে সংযুক্ত রপ্তানি দলিলাদি প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ফিডেক্সের মাধ্যমে প্রেরণ করা এসব পণ্যে প্রেরকের নাম কেরানীগঞ্জের নেপচুন ফ্রেইট লি. নামেরি একটি প্রতিষ্ঠান।
আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সংশ্লিষ্টরা জানান, নেপচুন ফ্রেইটের উত্তরার আশকোনায় একটি অফিস রয়েছে। ওই অফিসের রুবেল নামে একজন ওই ৭ কার্টনে তৈরি পোশাক-জিন্সের প্যান্ট অস্ট্রেলিয়ায় প্রেরণের জন্য ইউনাইটেড এক্সপ্রেস লিমিটেডে বুকিং দিয়ে যান। বনানীর ইউনাইটেড ফ্রেইটের পরামর্শক্রমে ইউনাইটেড এক্সপ্রেস প্রথমবারের মতো নেপচুন ফ্রেইটের ওই ৭টি কার্টন গ্রহণ করে বলে জানা যায়।
পরবর্তী সময়ে ইউনাইটেড এক্সপ্রেস কার্টনগুলো ফেডেক্সে পাঠায়। ফেডেক্স তাদের হাবে পণ্যগুলো সংরক্ষণ করে পরে কার্গো ভিলেজে প্রেরণ করে। সেখানকার স্ক্যানে সন্দেহজনক ওই সাতটি কার্টনকে আলাদা করা হয়, পরে সেসব কার্টন থেকে বিপুল পরিমাণ এ অ্যামফিটামিনের চালান উদ্ধার করা হয়।