করোনা মহামারি এরই মধ্যে ৮ লাখ ৯০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ মহামারির সার্বক্ষণিক তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর তথ্যমতে, বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত প্রায় পৌনে তিন কোটি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৯৩ লাখের বেশি রোগী।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রাথমিক পর্যায় থেকেই নিরাপদ ও কার্যকর টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গত ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, বিভিন্ন দেশে করোনার ১৭৬টি সম্ভাব্য টিকা নিয়ে কাজ চলছে। এর মধ্যে ৩৪টি টিকা মানবদেহে পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এ টিকাগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার সহযোগিতায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের উদ্ভাবিত টিকাটি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে। মানবদেহে এ টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় এটি নিরাপদ ও কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। চীনের সিনোভ্যাক, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না এবং মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত সম্ভাব্য টিকাগুলোরও তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবিত আরও কয়েকটি করে সম্ভাব্য টিকাও রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই খসড়া তালিকায়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ তালিকায় নেই রাশিয়ার কোনো টিকার নাম।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রাশিয়ার গ্রাহক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার বরাত দিয়ে দেশটির বার্তা সংস্থা আরআইএ গতকাল সোমবার বলেছে, দ্বিতীয় এই টিকা উদ্ভাবন করেছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভেক্টর ইনস্টিটিউট। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে এ টিকার পরীক্ষা শুরু হবে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, চীনের প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাক বায়োটেক ও সিনোফার্মের উদ্ভাবিত করোনার সম্ভাব্য টিকাগুলোসহ ১০টি সম্ভাব্য টিকার প্রদর্শন শুরু করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। বেইজিংয়ে চলতি সপ্তাহে আয়োজিত বাণিজ্য মেলায় এ প্রদর্শনী শুরু হয়। বর্তমানে দুটি টিকারই তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এগুলো বাজারে ছাড়া যাবে বলে প্রত্যাশা করছে উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠান দুটি। সিনোভ্যাকের এক মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, টিকা উৎপাদনে তাঁরা এরই মধ্যে একটি কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ কারখানায় বছরে ৩০ কোটি ডোজ টিকার উৎপাদন সম্ভব।
এদিকে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া গতকাল জানায়, চীনা সেনাবাহিনীর গবেষকেরা করোনার একটি সম্ভাব্য টিকা উদ্ভাবন করেছেন। করোনাভাইরাস রূপান্তরিত হলেও এ টিকা কাজ করবে বলে দাবি করেছেন ওই গবেষকেরা।