ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) স্থাপন করা হয়েছে মাছের জিন ব্যাংক। দেশে প্রথমবারের মত স্থাপিত এই জিন ব্যাংকটিতে ইতোমধ্যে ৭০ প্রজাতির মাছের জাত স্থান পেয়েছে।
শনিবার দুপুরে ইনস্টিটিউটের নিজস্ব একটি পুকুরে এই জিন ব্যাংকটির উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এর আগে সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের মাঝে মাছের পোনা বিতরণ করেন মন্ত্রী।
এছাড়াও বিএফআরআই স্বাদুপানি কেন্দ্রের চলমান গবেষণা কার্যক্রম মাছের জাত উন্নয়ন, বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণ ও চাষ, বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ, অপ্রচলিত মৎস্য সম্পদ কুচিয়া ও মুক্তা চাষ, মহাশোল ও পাঙ্গাস মাছের প্রজনন ও চাষসহ প্রতিষ্ঠানটির গবেষণালব্ধ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী।
পরে মন্ত্রী বিএফআরআই স্বাদুপানি কেন্দ্রের চলমান গবেষণা কার্যক্রম কৈ মাছ, মনোসেক্স তেলাপিয়া এবং সাদা পাঙ্গাস মাছের জার্মপ্লাজম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, বাঙালির নিজস্ব যে মাছ, সে মাছ যদি হারিয়ে যায় আমাদের নতুন প্রজন্ম বলবে রয়না মাছ, পাবদা মাছ, পুটি মাছ, শোল মাছসহ অনেক মাছের ছবি দেখাতে। এখন ছবির প্রয়োজন নেই। মানুষের কাছে সরাসরি পৌঁছে দেবার জন্য ও বাজারজাত করার সব প্রক্রিয়াকে সামনে নিয়ে এসেছি। এই সাফল্য বিএফআরআই’র।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশের মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মিটিয়ে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্যখাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। মৎস্যখাতের উন্নয়নের মাধ্যমে বেকারত্ব ও দারিদ্রতা দূর করে সবাইকে স্বাবলম্বী করতে চান। দেশের মৎস্য সম্পদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মা ইলিশ ও জাটকা সুরক্ষায় অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ও প্রজননকালে আহরণ নিষিদ্ধকাল নির্ধারণ এই ইনস্টিটিউটের গবেষণার সুপারিশের ভিত্তিতে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর সুফল এখন দেশবাসী পাচ্ছে। নদ-নদী ও সাগরে জাল ফেললেই এখন জাল ভরে আসছে আমাদের রূপালী ইলিশ।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মৎস্য সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ।