গায়ে ধাক্কা লাগা নিয়ে শুরু হয় দুই গলির কিশোরদের রেষারেষি। হামলা–পাল্টা হামলায় এক পর্যায়ে রাজধানীর ওয়ারীতে খুন হয় মুন্না। তবে একে দুই গ্যাং–এর যুদ্ধ হিসেবে দেখতে নারাজ পুলিশ। এ ঘটনায় ১৬ কিশোরসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ওয়ারি থানা পুলিশ।
গায়ে ধাক্কা লাগলো কেন? তারই জেরে ১৭ বছরের মুন্নার ওপর রড ও চাপাতি নিয়ে হামলা করে এক দল কিশোর। পুলিশ বলছে, ঠিক এক বছর আগে আশুরার দিন ওয়ারীর চন্দ্রমোহন বসাক স্ট্রিটে নিহত মুন্না ও বিজয়কে মারধর করে বাপ্পি ও সায়েমরা।
আবার এক বছর পর আশুরার দিন সকালে মুন্না ও বিজয়রা নিজেদের গলি লাল চাঁন মুকিম লেনে বাপ্পি ও সায়েমদের পাল্টা মার দেয়। প্রতিশোধ নিতে বিকেলে বাপ্পি ও সায়েমরা পাল্টা হামলা চালালে গুরুতর আহত হয় মুন্না ও তার মামাতো ভাই শাহীন।
ওয়ারী জোনের উপ পুলিশ কমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘এলাকাভিত্তিক একটা রেষারেষির জেরে ঘটনাটি ঘটেছে।’
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ৩০ আগস্ট আশুরার দিন বিকেলে আগে থেকেই ওয়ারির চন্দ্রমোহন বসাক স্ট্রিটের রাধা গোবিন্দ ঝিউ মন্দিরের কাছে কয়েকজন কিশোর মুন্না ও শাহীনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
তারা সেদিন মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হলে তাদের মোটরসাইকেল থামিয়ে ছুরি ও রড দিয়ে আঘাত করা হয়। এক পর্যায়ে একদল কিশোর মুন্না ও তার ভাই শাহীনকে মারতে মারতে নিয়ে আসে। ওই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী ছিলো বাপ্পি ও ফেরদৌস।
এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মুন্নাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে শাহীন।
ওয়ারি বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, কিশোররা বুঝতেই পারেনি যে, তাদের আঘাতে এতো বড় ধরনের একটা ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা এলাকার একটি ভবনের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেখানে সব কিছুই পরিস্কার দেখা যাচ্ছে।
ঘটনার পরদিন অভিযান চালিয়ে ১৩ কিশোরসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে ওয়ারি থানা পুলিশ। পুলিশ বলছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই ঘটনা ঘটে।
শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, গ্রেপ্তাররকৃতদের মধ্যে ১৩ জন কিশোর ও বাকি ৪ জন যুবক। অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ, আপনার সন্তানরা কাদের সঙ্গে মেলামেশা করছে তা খেয়াল রাখুন।
মুন্না ওয়ারিতে বাসের হেলপারের কাজ করতো। ওই ঘটনায় মুন্নার বাবা মনিরুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে ওয়ারি থানায় মামলা করেন।