ঢাকা: সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা সংক্রান্ত একটি চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেই চিঠি কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইন সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরে অমিত দাসগুপ্ত বলেন, বিদ্যমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতে দেশের সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে অভিযান পরিচালনা করছে, সে প্রসঙ্গে গত ৪ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেটিতে সংক্ষুব্ধ হয়ে একজন আইনজীবী রিট পিটিশন দায়ের করেন। আজ শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন। এটির কার্যকারিতা স্থগিত করেননি। ফলে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এটি বহালই থাকবে।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রফিকুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান এ রিট দায়ের করেন।
গত ৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব বরাবরে পাঠানো স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের পরে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান করছেন। একটি হাসপাতালে একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করাতে হাসপাতালগুলোর স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং এ কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সার্বিক কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করার জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাও সদস্য হিসেবে আছেন। তাই ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো অপারেশন পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা করা যাবে।
এমতাবস্থায় যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ রূপ অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা এবং জরুরি অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক পরিচালনা করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।